বিজয়ের মাসে ফুটপাতের রঙিন হাট
ডিসেম্বর এলেই রাজধানীর রাস্তাঘাটে এক বিশেষ আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। বিজয়ের মাসের গর্ব যেন শহরের বাতাসে মিশে থাকে। আর চার দিন পরেই ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’। এ সুযোগে গুলিস্তানসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাত জুড়ে শুরু হয় জাতীয় পতাকা, ব্যাজ, টুপি আর হাতে ধরার ছোট ছোট পতাকার জমজমাট বিকিকিনি। ছবি: মাহবুব আলম
-
গুলিস্তানের ফুটপাত ধরে হাঁটলেই দেখা যায়, হাতের তৈরি কাপড়ের পতাকা থেকে শুরু করে লাল–সবুজ ব্যান্ড, কাগজের ব্যাজ, শিশুদের জন্য ছোট টুপি সবই সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা।
-
নানা বয়সের মানুষের ভিড়ে ফুটপাত যেন ক্ষণিকের উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। কেউ নিজের জন্য, কেউবা বাচ্চাদের জন্য কিনে নিচ্ছেন দেশপ্রেমের প্রতীক এসব সামগ্রী।
-
তবে এই উৎসবের ভিড়ের আড়ালে রয়েছে ক্ষীণ এক আক্ষেপ। ফুটপাতের দোকানিরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার বিক্রি বেশ কম।
-
এক বিক্রেতা বলেন, ‘গত বছর তো এই সময় স্টক রাখতে পারতাম না। এবছর মানুষ দেখছে, দাম জিজ্ঞেস করছে, কিন্তু অনেকেই কিনছে না।’
-
বিক্রেতাদের মতে, মূলত জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মানুষের হাতে অতিরিক্ত খরচ করার মতো টাকা কমে গেছে। অনেকেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটাতেই মনোযোগ দিচ্ছেন। ফলে দেশপ্রেমের আবেগ থাকলেও ক্রেতাদের সংখ্যা তুলনামূলক কম।
-
বিক্রি কম হলেও দোকানিদের মনোবল ভাঙেনি। কারণ তাদের কাছে বিজয়ের মাস মানেই আনন্দ, শ্রদ্ধা আর জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা। তাই ধুলো জমা ফুটপাতেও তারা লাল–সবুজের স্বপ্ন সাজিয়ে বসে থাকেন সারাদিন।
-
গুলিস্তান এলাকার এই চেনা দৃশ্য বারবার মনে করিয়ে দেয় বাংলাদেশের মানুষ দেশকে ভালোবাসে, জাতীয় পতাকার প্রতি তাদের আবেগ কখনোই কমে না।
-
অর্থনৈতিক চাপ কিছুটা প্রভাব ফেললেও, বিজয়ের মাসে লাল–সবুজের উচ্ছ্বাস এখনো শহরের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ে। আর দোকানিরা প্রত্যাশা করেন ১৬ ডিসেম্বরের আগের দু–একদিনে হয়তো আবার জমে উঠবে তাদের বিক্রি, রঙিন হয়ে উঠবে ফুটপাতের বিজয়ের হাট।