অভিনয়ের আলোকিত মানুষ ডলি জহুরের জন্মদিন আজ
চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয়ের আলো ছড়িয়ে চলেছেন যিনি, তিনি শুধুই একজন অভিনেত্রী নন; তিনি শিল্প-সাধক। মঞ্চ, ছোটপর্দা কিংবা রূপালি পর্দা-সব জায়গাতেই তার সাবলীল পদচারণা। আজ সেই গুণী অভিনয়শিল্পী ডলি জহুরের জন্মদিন। এই দিনে ফিরে দেখা যাক তার শিল্প-ভবনের কিছু অধ্যায়। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
১৯৫৩ সালের এই দিনে ঢাকার গ্রিন রোডে তার জন্ম। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। শিক্ষাজীবনে তিনি পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে, কিন্তু জীবনের মূল সুরটি বাঁধা পড়েছিল মঞ্চনাটকের সঙ্গে।
-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে এক সাংস্কৃতিক আয়োজনে নাটক মঞ্চায়নের সিদ্ধান্ত হয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে। সেই সময় শেখ কামাল তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘তুই না নাটক করিস, এখানে নাম দে।’ এভাবে ‘নাট্যচক্র’ নামের নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত হন ডলি জহুর। এখানেই শুরু হয় তার মঞ্চজীবনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা। দলটির ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ নাটকে তার প্রথম অভিনয়।
-
নাট্যচক্র থেকে ‘কথক’ নাট্যগোষ্ঠীতে চলে আসেন তিনি, যেখানে পরিচয় হয় জহুরুল ইসলামের সঙ্গে-যিনি পরবর্তীতে তার জীবনসঙ্গী হন। এরপর একে একে কাজ করেছেন ‘প্রাগৈতিহাসিক’, ‘মানুষ’, ‘অনুস্বারের পালা’, ‘ইবলিশ’, ‘ময়ূর সিংহাসন’সহ একাধিক নাটকে। আরণ্যক নাট্যদলে যুক্ত হয়ে হয়ে ওঠেন সক্রিয় কর্মী।
-
ডলি জহুরের সিনেমায় অভিষেক ঘটে ‘অসাধারণ’ নামের একটি ছবির মাধ্যমে। এরপর একের পর এক দর্শকনন্দিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘ঘানি’, ‘রং নাম্বার’, ‘দ্বারুচিনি দ্বীপ’, ‘নিরন্তর’ ও ‘এবাদত’ প্রতিটি ছবিতে তিনি দুদার্ন্ত অভিনয় দিয়ে দর্শকের নজর কেড়েছিলেন।
-
অভিনয়ে নিপুণতার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন দুবার। ১৯৯২ সালে ‘শঙ্খনীল কারাগার’-এর জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী এবং ২০০৬ সালে ‘ঘানি’-র জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী। তবে ডলি জহুরের কাছে সবচেয়ে বড় অর্জন মানুষের ভালোবাসা।
-
১৯৭৬ সালের ৫ নভেম্বর সহঅভিনেতা জহুরুল ইসলামের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
-
দীর্ঘ ৯ বছর পর তার কোল জুড়ে আসে পুত্র রিয়াসাত। কিন্তু সুখের জীবনে ছায়া নামে ২০০৬ সালের ১০ নভেম্বর, যখন তিনি হারান তার প্রিয় জীবনসঙ্গীকে।এরপর থেকে একা সন্তানকে বড় করে তোলেন তিনি।