প্রতিযোগী থেকে পথপ্রদর্শক লিজা
বাংলাদেশের আধুনিক সংগীতজগতের যে কজন শিল্পী প্রতিযোগিতা থেকে উঠে এসে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম সানিয়া সুলতানা লিজা। ১৯৯৩ সালের ২২ ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া গুণী এই শিল্পী শ্রোতাদের কাছে বেশি পরিচিত শুধু লিজা নামেই। কণ্ঠের দৃঢ়তা, আবেগী পরিবেশনা আর ধারাবাহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি গড়ে তুলেছেন নিজস্ব একটি সংগীত পরিচয়। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
২০০৮ সাল লিজার জীবনে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এনটিভিতে প্রচারিত জনপ্রিয় সংগীত প্রতিযোগিতা ‘ক্লোজআপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’–এ অংশ নিয়ে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। এই বিজয়ের মাধ্যমেই দেশের সংগীতাঙ্গনে তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে। তরুণ বয়সেই লিজার কণ্ঠে ছিল পরিণত ভাব, যা বিচারক ও দর্শক দু’পক্ষকেই মুগ্ধ করেছিল।
-
প্রতিযোগিতার মঞ্চে জয় পেলেও লিজা থেমে থাকেননি। ধীরে ধীরে নিজেকে একজন পরিণত সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার গানে আবেগ, শুদ্ধতা ও নিয়ন্ত্রণ এই তিনের মেলবন্ধন শ্রোতাদের আলাদা করে টানে। আধুনিক ও ক্লাসিক দুই ধরনের গানেই তার সাবলীলতা লক্ষ্য করা যায়।
-
শুধু শিল্পী হিসেবেই নয়, সংগীত বোঝার গভীরতার কারণে বিচারক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন লিজা। ২০২৩ সালে আরটিভিতে প্রচারিত সংগীতবিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘ইয়াং স্টার সিজন ২’–এ তিনি প্রধান বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন। প্রতিযোগীদের কণ্ঠ, তাল ও সম্ভাবনা বিশ্লেষণে তার মন্তব্য প্রশংসিত হয়।
-
২০২৫ সালে শিশু-কিশোরদের নিয়ে আয়োজিত সংগীতভিত্তিক রিয়েলিটি শো আরটিভি লিটল স্টার–এও প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন লিজা। ‘আগামীর কণ্ঠস্বর’ থিমের এই আয়োজনে নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের গড়ে তোলার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।
-
লিজার যাত্রা প্রমাণ করে প্রতিভার সঙ্গে ধৈর্য ও নিষ্ঠা থাকলে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব। একজন প্রতিযোগী থেকে বিচারক হয়ে ওঠার এই যাত্রা তরুণ শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা। তিনি শুধু একজন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নন, বরং আগামীর শিল্পীদের পথ দেখানো একজন দায়িত্বশীল সংগীতব্যক্তিত্ব।