চলছে খেজুর গাছ প্রস্তুতের কাজ
দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। হেমন্তের শুরু থেকেই গ্রামীণ প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা বইছে। ঝিনাইদহের প্রকৃতিতেও সাড়া ফেলেছে হেমন্ত। আসন্ন শীতে খেজুরের রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেছেন গাছিরা। জেলার গ্রামে গ্রামে চলছে খেজুর গাছের পরিচর্যা। খেজুর গাছ প্রস্তুতের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। গাছিরা জানান, গাছের সংখ্যা কমে গেলেও তাদের রস সংগ্রহের চেষ্টা থেমে নেই। ছবি: শাহজাহান নবীন
-
গ্রামে গ্রামে চলছে খেজুর গাছ প্রস্তুত করার কাজ। রাস্তার ধারে কিংবা জমির আইলে থাকা খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।
-
ভোর হলেই ঠুঙ্গি, বাইলধারা, দড়ি, গাছিদা হাতে ছুটছেন তারা। ধারালো দা দিয়ে নিপুণ হাতে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করছেন। মাথা পরিষ্কার করার পর গাছগুলোকে দুই সপ্তাহের বিশ্রাম দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে শীতে খেজুর রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির মহাযজ্ঞকে ঘিরে কৃষকের চোখেমুখে স্বপ্নের হাতছানি।
-
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, খেজুর গুড় ও রসের ঐতিহ্যের অন্যতম ভাগিদার ঝিনাইদহ। প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ও জলবায়ুর কারণে ঝিনাইদহ অঞ্চলে খেজুর গাছ ভালো জন্মে। জেলা থেকে প্রতি বছর অন্তত ৮০০ থেকে ৮৫০ টন খেজুর গুড় উৎপাদন করা হয়।
-
প্রাকৃতিক ও নিরাপদ উপায়ে গ্রামের গাছিরা এসব গুড় তৈরি করেন। কাঁচা রসের জনপ্রিয়তাও ব্যাপক। সারাদেশে খেজুর গুড়, রস ও পাটালির ব্যাপক চাহিদা। ঝিনাইদহ অঞ্চল থেকে এসব রস, গুড় ও পাটালি সারাদেশে সরবরাহ করা হয়।
-
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হালনাগাদ তথ্য বলছে, বর্তমানে জেলায় ১ লাখ ৪২ হাজার ২৩৫টি খেজুর গাছ আছে। রস আহরণযোগ্য গাছের পরিমাণ ১ লাখ ১২ হাজার ৭৬০টি। বাকি গাছগুলোর মধ্যে কিছু চারা গাছ। কিছু গাছ থেকে গাছিরা রস সংগ্রহ করেন না। শীত মৌসুমে জেলায় ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ২৪১ লিটার খেজুর রস ও ৮৭২ মেট্রিন টন খেজুর গুড় উৎপাদন হয়। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। জেলার মধ্যে কোটচাঁদপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৪৭ হাজার ৮৫৩টি খেজুর গাছ আছে।