‘সংকটকালে দেশের তরুণরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে’
করোনাভাইরাস সংকটের শুরু থেকেই দেশের তরুণেরা মানুষের সেবায় এগিয়ে এসেছে। হাত বাড়িয়ে দিয়েছে যার যার অবস্থান থেকে। তরুণ এমপি, আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা এই সংকট থেকে উত্তরণের সংগ্রামে কেউ পিছিয়ে নেই। তরুণদের এই সামগ্রিক প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টায় আয়োজন করা হয় বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিকের দশম পর্ব।
এ পর্বের বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘করোনাসংকট মোকাবিলায় তরুণদের ভূমিকা’। আওয়ামী লীগের এই বিশেষ ওয়েবিনার প্রচারিত হয় দলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় এবারের পর্বে আলোচক হিসেবে যুক্ত হন- বাংলাদেশ সরকারের পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, বাগেরহাট-২ আসনের সাংসদ শেখ সারহান নাসের তন্ময়, চট্টগ্রামের নারী সাংসদ খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজের কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতালের মেডিসিন ও ইনফেকশাস ডিজিজ বিশেষজ্ঞ ডা. ফরহাদ উদ্দিন হাছান চৌধুরী মারুফ, মিশন সেভ বাংলাদেশের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান কাদির এবং চ্যানেল ২৪ এর রিপোর্টার সাংবাদিক জিনিয়া কবির সূচনা।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘যুগে যুগে সংকটকালে সবসময় তরুণরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে বর্তমান করোনা সংকটকালে সহায় দুস্থ মানুষের পাশে সবার আগে গিয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের তরুণ সমাজ। আমার নির্বাচনী এলাকায় ‘ডাক্তার যাবে বাড়ি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে যখনই কেউ অসুস্থ হয়েছে, খবর পেলেই ডাক্তার তার বাড়িতে ছুটে যেতেন, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিতেন। আমার এলাকা নদী ভাঙন প্রবণ এলাকা, নদী ভাঙনের স্বীকার সেই সব মানুষের পাশে আমি সবসময় দাঁড়িয়েছি। আমার এলাকায় অসহায়, দুস্থ মানুষকে করোনাকালীন সংকটে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি।’
খাদিজাতুল আনোয়ার সনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্মলগ্নের আগ থেকেই তরুণরাই সকল সংগ্রাম আন্দোলন ও সংকটকালে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন। দেশের ক্রান্তিলগ্নে তরুণরাই সবার আগে এগিয়ে এসেছে, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমার এলাকা ফটিকছড়িতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকেই তরুণদের সঙ্গে সমন্বয় করে ডোর টু ডোর গিয়ে জনসচেতনতা তৈরির চেষ্টা করেছি। আমাদের পূর্ণাঙ্গ চারটি আইসোলেশন সেন্টার চালু করেছি। আমাদের ২০ শয্যা বিশিষ্ট যে হাসপাতাল রয়েছে সেটিকে পূর্ণাঙ্গ কোভিড হাসপাতালে প্রস্তুত করার কাজ চলছে। শুরুতে জনসচেতনতা তৈরি করতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়েছি, মাস্ক দিয়েছি। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে যুবক ও তরুণ ভাইদের মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি।’
উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তারুণ্যের সংস্কৃতিকে ধারণ করে। যদি দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি পর্যন্ত সবজায়গাতে তারুণ্যের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। করোনা সংকটকালীন সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমস্ত নেতাকর্মী মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দুর্যোগ মহামারি মোকাবিলার অভিজ্ঞতা ছিল বলেই দুর্যোগ শুরুর পর থেকে দল ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষে দলীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিলে এ পর্যন্ত এক কোটি ২৫ লাখ পরিবারকে খাদ্য সহায়তাসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়েছেন।’
চ্যানেল ২৪-এর স্টাফ রিপোর্টার জিনিয়া কবির সূচনা বলেন, ‘গণমাধ্যম কর্মীদের কাজ হচ্ছে সঠিক তথ্য তুলে ধরা। আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল সঠিক তথ্য তুলে আনা। করোনা সংকট মোকাবিলার ত্রুটি কিংবা হাসপাতালের সমন্বয়হীনতা তুলে ধরার পর স্বাস্থ্যসেবায় আরও সুদূরপ্রসারী ভালো ফলাফল লক্ষ্য করা যায়। গণমাধ্যমকর্মীরা জীবন বাজি রেখে কাজ করছেন এই মহামারিতে। চিকিৎসা নিয়ে স্বচ্ছতা হওয়া উচিত। এমনকি টেস্টের ক্ষেত্রে কিটের ব্যবহারে সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়া উচিত।’
এইউএ/এফআর/জেআইএম