একতরফা জেনেও ইউপি নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপি


প্রকাশিত: ০২:১৩ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনের মতো ইউনিয়ন পরিষদেও দলীয়ভাবে একতরফা নির্বাচন হবে, তারপরও গণতন্ত্রের স্বার্থে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।’

রোববার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।

এরআগে ইউপি নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানাতে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইসি সচিব সিরাজুল ইসলামের হাতে তুলে দেন রিজভী। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) একান্ত সচিবের রুমে গিয়ে সিইসির সাক্ষাৎ চেয়ে না পেয়ে ইসি সচিবের হাতেই চিঠিটি তুলে দেন রিজভী।

এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান পদে নিবন্ধিত দলগুলো প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকছে। চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন দলীয়ভাবে হলেও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদের ভোট হবে নির্দলীয়ভাবে।

ইসি সচিবের সঙ্গে দেখা করার পর এ বিষয়ে সাংবাদিকদের রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা আজকে ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে জানাতে এসেছি। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজ মনে করেন দলীয়ভাবে ইউপি নির্বাচন হলে সামাজিক সংস্কৃতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। ইউপিতে প্রার্থীরা ব্যক্তি পরিচয়ে পরিচিত, রাজনৈতিক পরিচয় কাজ করে না।

রিজভী বলেন, বিএনপি মনে করে ইউপিসহ যেকোন স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হলে সামাজিকবন্ধন বিনষ্ট হবে। গ্রামে গ্রামে সংঘাত সৃষ্টি হবে। তারপরও গণতন্ত্রের স্বার্থে, গণতন্ত্রকে সম্প্রসারিত করতে আমরা ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তফসিল হওয়ার পর কেন এ বিষয়ে ইসিকে জানানোর প্রয়োজন হলো? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা এর আগে পৌরসভা নির্বাচনে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু ইসি বিষয়টি আমলে নেয়নি। আশা করি, এবার বিষয়টি আমলে নেবে।

প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এই সরকার প্রহসনের নির্বাচনের মাধমে গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ভোট জালিয়াতি, ডাকাতি এখন স্থায়ী রুপ নিয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকে আমরা আন্দোলন হিসেবে নিয়েছি।

বিএনপির আপত্তিতে ইসির ‘কিছুই করার নেই’
দলীয় ইউপি ভোটে বিএনপির আপত্তিতে ইসির করার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ। বিএনপির আপত্তির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ জানান, আইনের আলোকে বিধিমালা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আইন প্রণয়ন করে সংসদ। সংসদ দলীয়ভাবে ইউপি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ পর্যায়ে আমাদের করার কিছু করার নেই।

শাহ নেওয়াজ বলেন, দলীয়ভাবে ভোট হওয়ায় সংঘাত ও সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার শঙ্কা নেই। আমরা পৌর নির্বাচনও দলীয়ভাবে করেছি। এতে কোনো খারাপ পরিস্থিতি হয়নি। ইউপি ভোটেও কোনো সম্প্রীতি নষ্ট হবে বা সংঘাত হবে তা আমি মনে করি না।

উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে ২২ মার্চ দেশের ৭৫২ ইউপির ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি এসব ইউপির ভোটের তফসিল দেয় ইসি। পর্যায়ক্রমে আরো পাঁচ ধাপে ইউপি ভোট হবে।

এরআগে গেলবছরের শেষে দলীয় প্রতীকে পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভরাডুবি হয় বিএনপির। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে সংসদের বাইরে থাকা দলটির অভিযোগ, পৌর নির্বাচনে দেড় শতাধিক কেন্দ্র দখল হয়েছিল।   

এইচএস/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।