পুনর্বাসনের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সংবাদ সম্মেলন
খুলনার শের-ই-বাংলা বিপনী কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত দেড় শতাধিক ব্যবসায়ী পুনর্বাসনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে। শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে তারা এ সংবাদ সম্মেলন করে। সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতা পাঠ করেন শের-ই-বাংলা বিপনী কেন্দ্রের দোকান ঘর মালিক সমিতির সভাপতি চ ম মুজিবর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিপনী কেন্দ্রের সভাপতি আলহাজ্ব চ ম মজিবুর রহমান বলেন, দেড় শতাধিক ব্যবসায়ী রেলওয়ের লাইসেন্স নিয়ে সরকারের সব ধরনের রাজস্ব দিয়ে সেমিপাকা দোকান ঘর করে দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছেন। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান যুক্ত। রি-মডেলিং রেলস্টেশন নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী উচ্ছেদের শিকার হয়েছেন। রেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রি-মডেলিং রেলস্টেশন নির্মাণের স্বার্থে ব্যবসায়ীরা স্ব-উদ্যোগে তাদের দোকান ঘর ভেঙে নিয়ে গেছেন। এ অবস্থায় দীর্ঘ দিনের কর্মসংস্থান হারিয়ে চরম মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রেলওয়ের লাইসেন্স প্রাপ্ত জমি রেলের প্রয়োজনে যেমন ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হয়েছে, তেমনি জমি উচ্ছেদের পূর্বে পুনর্বাসনের কথাও উল্লেখ রয়েছে। এ অবস্থায় অসহায় ব্যবসায়ীরা খুলনাস্থ ৬ জন সংসদ সদসের সুপারিশ এবং রেলমন্ত্রীসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর বিকল্প স্থানে রেলের পরিত্যক্ত জমিতে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে লিখিত আবেদন করেন।
এছাড়া পুনর্বাসনের দাবিতে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলে স্মারকলিপি, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে। এক পর্যায়ে গত বছর ১ জুন রেলপথ মন্ত্রী ও রেলওয়ের ডিজি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে এবং তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তাকে (পাকশি) নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে দীর্ঘ ৮ মাস ধরে ব্যবসায়ীরা ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেও কোন কাজ হয়নি। তিনি অজ্ঞাত কারণ বা অদৃশ্য হাতের ইশারায় বিষয়টিকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে ছল-চাতুরি শুরু করেছেন। কাজেই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় হতাশাগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় পুনর্বাসনের দাবিতে ৭ দিনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে ১৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি এবং কালো ব্যাচ ধারণ ও পতাকা উত্তোলন। ১৪ মার্চ কালো পতাকাসহ মোটরসাইকেল মিছিল। ১৫ মার্চ কাফনের কাপড় পড়ে মিছিল। ১৬ মার্চ খুলনাস্থ রেল ভবন ঘেরাও ও প্রতিবাদ সভা। ১৯ মার্চ বিপনী কেন্দ্রের সামনে অবস্থান ধর্মঘট এবং ২০ মার্চ মানববন্ধন।
সংবাদ সম্মেলনে বিপনী কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মো.জহির উদ্দিন বাবরসহ শতাধিক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
আলমগীর হান্নান/এসএস/এমএস