নারিকেলকে ঘিরে লক্ষ্মীপুরের অর্থনীতি চাঙ্গা


প্রকাশিত: ১১:০৫ এএম, ১৫ মার্চ ২০১৬

লক্ষ্মীপুরে এবার প্রায় একশ কোটি টাকার নারিকেল উৎপাদন হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত নারিকেল সু-স্বাদু ও তৈলের গুণগত মান ভালো হওয়ায় তা জেলাবাসীর চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপকূলীয় এ জেলায় নারিকেল ভিত্তিক শিল্প-কারখানা স্থাপিত হলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগের পাশাপাশি গতিশীল হতো অর্থনীতি।

Lakshmipur

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, কমলনগর ও রামগতিতে বসত বাড়ির আঙিনায় কিংবা কৃষি জমির পাশে পতিত জমিতে নারিকেল গাছ লাগিয়ে বেশ লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। এতে করে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নারিকেল চাষ।

রায়পুর উপজেলার কেরোয়া, চরপাতা, মধুপুরসহ জেলার বিভিন্নস্থানে যতদূর চোখ যায় নারিকেল গাছের সবুজ হাতছানি দেখা মেলে। তবে পরিকল্পিতভাবে চাষাবাদ হলে গ্রামীণ অর্থনীতি আরও বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভাষ্যমতে, লক্ষ্মীপুরে ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে নারিকেল বাগান রয়েছে। প্রতি বছর এ জেলায় ৫ কোটি ৩০ লাখ নারিকেল উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় একশ কোটি টাকা। এক জোড়া নারিকেল এখানে বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এখানকার উৎপাদিত নারিকেল জেলাবাসীর চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিনই ট্রাকযোগে সড়ক পথে ঢাকা-চট্রগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।

Lakshmipur

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলায় নারিকেলের সবচেয়ে বড় হাট বসে সদর উপজেলার দালাল বাজারে।

নারিকেল বেচাকেনা ও ছোবড়া বের করার কাজে প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এ বাজারকে কেন্দ্র করে। এছাড়াও রায়পুরের হায়দরগঞ্জ বাজারেও নারিকেলের বাজার জমজমাট।

হায়দরগঞ্জ মডেল স্কুলের শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, নারিকেলের ছোবড়াও বিক্রি হচ্ছে ভালো দামে। যা দিয়ে তৈরি হচ্ছে জাজিম, পাপশ ও ওয়ালমেটসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী। এখান থেকে ব্যবসায়ীরা নারিকেলের পাশাপাশি কিনে নিচ্ছেন এসব ছোবড়াও। নারিকেলকে ঘিরে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা থাকে।

Lakshmipur

দালাল বাজারে কথা হয় সদর উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের আবদুল করিম ও মহাদেবপুর এলাকার ছাত্তার বেপারীর সঙ্গে। তারা জানায়, এখানকার উৎপাদিত নারিকেল তৈলের গুণগতমান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে এ অঞ্চলে নারিকেল ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে চাষিরা যেমন ভালো দাম পেত, তেমনি লাভবান হতো ব্যবসায়ীরাও।

রামগঞ্জ পৌরসভার জগতপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী ফারুক আহমেদ বলেন, আমাদের এ অঞ্চলে অপরিকল্পিতভাবে নারিকেল গাছ লাগানো হয়। পরিকল্পিতভাবে চাষাবাদ হলে গ্রামীণ অর্থনীতি আরও বিপ্লব ঘটনানো সম্ভব। নারিকেল ভিক্তিক শিল্প-কারখানা গড়ে তুললে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়ে বেকার সমস্যা কিছুটা লাঘব হবে।

লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, লক্ষ্মীপুরে প্রায় বছরে একশ কোটি টাকার নারিকেল উৎপাদনের এ অঞ্চলে নারিকেল ভিক্তিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে কৃষকরা যেমন লাভবান হতো, তেমনি গতিশীল হতো দেশের অর্থনীতি।

এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।