আত্মহত্যা করেন উদীচি নেতা দীপক
হত্যা নয় গ্রাহকের ২০ লাখ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়েই আত্মহত্যা করেছেন উদীচি নেতা দিপক। নিজের পরিধেয় প্যান্টের বেল্ট গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এ তথ্য মিলেছে।
এ ঘটনায় তাহেরা নামের এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। তাহেরাকে দিয়ে দীপক ইন্স্যুরেন্সের টাকা কালেকশন করতো।
জানা যায়, ইন্স্যুরেন্সের নামে গ্রামবাসী থেকে নেয়া প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের এ নেতা। পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে চট্টগ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন দীপক চন্দ্র দে (৬০)।
দীর্ঘদিন পলাতক থাকা দীপক চন্দ্রকে পেয়ে এলাকাবাসী সোমবার পাওনা আদায়ের জন্য একটি ঘরে আটক করে রাখে। সে ঘরেই দীপক নিজের পরিধেয় প্যান্টের বেল্ট গলায় লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ জানায়।
ঘটনাস্থল থেকে সীতাকুণ্ড থানার এসআই আশরাফুল আলম বলেন, এলাকার লোকজনের দেয়া খবরের ভিত্তিতে দুপুরে ঘোড়ামারা পাক্কা মসজিদ এলাকার আবু তাহেরের ভাড়া ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দীপকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাহেরা বেগম নামে এক নারীকে থানায় নেয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এসআই আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, দীপক সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতেন। তিনি ঘোড়ামারা এলাকার অসংখ্য নারী পুরুষ থেকে ইন্স্যুরেন্স করে দেয়ার কথা বলে প্রায় ২০/২৫ লাখ টাকা নিয়ে যান। কিন্তু এসব টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা দেননি। এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হলে বেশ কিছু দিন ধরে পলাতক ছিলে দীপক। গতকাল তাকে পেয়ে এলাকার লোকজন এ ঘরে আটক করে রাখে। এবং রাতের কোনো এক সময় তিনি নিজেই আত্মহত্যা করেন।
তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে তদন্ত করছি। দীপকের লাশ ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হামসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাওনাদার নারী জানান, ইন্স্যুরেন্স করার কথা বলে দ্বিগুন তিনগুন লাভের লোভ দেখিয়ে তাহেরা বেগমের কথায় আমরা দীপক বাবুকে টাকা জমা দেই। তারা আমরা কাছ থেকে নিয়েছে ৭০ হাজার টাকা। এভাবে প্রায় ৫০/৬০ থেকে টাকা নিয়ে গেলেও আমরা সীতাকুণ্ডের অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাদের নামে কোনো টাকা জমা হয়নি। গতকাল তাকে আটক করে লোকজন তার স্বজনদের খবর পাঠালেও তারা জিম্মায় নিতে আসেননি। তার স্ত্রী এবং ছেলেকে ফোন করলেও তারা জানায় তারা এসব ঝামেলাই নাই।
পুলিশ জানিয়েছে দীপক হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠনের সীতাকুণ্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া উদিচী নামে একটি সাংস্কৃতি সংগঠনের এক সময় সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। দীপক উপজেলা মহাদেবপুর এলাকার (৪ নং ওয়ার্ড) রামকুমার মহাজনের ছেলে।
জীবন মুছা/এসএইচএস/আরআইপি