মঈন আলির নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ১৪২
আফগান বোলিংয়ে শুরু থেকে দিশেহারা ইংল্যান্ডের শোচনীয় পরাজয়ই আজ ভেবে নিয়েছিল সবাই। পুঁচকে আফগানিস্তানের সামনে ১০০ রানও করতে পারে কি না ইংলিশরা, সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় সংশয়ের। অথচ, শেষ মুহূর্তে এসে ম্যাচের লাগাম পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিয়ে নিল ইংল্যান্ড। এক মঈন আলির নৈপুণ্যেই আফগানিস্তানের সামনে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। ৩৩ বলে ৪১ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন আলি এবং তার সঙ্গী ডেভিড উইলি ১৭ বলে অপরাজিত থাকেন ২০ রানে।
অথচ প্রথম থেকে কী অসাধারণ বোলিংই না করে আসছিল আফগান বোলাররা। মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান, আমির হামজা কিংবা সামিউল্লাহ সেনওয়ারিদের বোলিং তোপে একের পর এক উইকেট হারাতে শুরু করে ইংল্যান্ড। এক সময় তো মোহাম্মদ নবী হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরী করেন। ১৫তম ওভারে ৮৫ রানে ৭ উইকেট হারানোর পরই মঈন আলি আর ডেভিড উইলির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ইংল্যান্ড।
শেষ ৫ ওভারে ৫৫ রান তোলে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। শেষ চার ওভারেই উঠেছে ৪৪ রান। অথচ ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে পরপর দুই বলে জেমস ভিন্স এবং ইয়ন মরগ্যানকে ফিরিয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তেরী করেছিলেন আফগান ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন মোহাম্মদ নবী। হ্যাটট্রিক ঠেকানোর জন্য ক্রিজে আসেন বেন স্টোকস। বলটাকে ফ্লাইট ডেলিভারিতে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন নবী। স্টোকস পরাস্ত হলেন। বল আঘাত করলো প্যাডে। জোরালো আবেদন ১১ আফগান ক্রিকেটারের। কিন্তু আম্পায়ার এস রবির মন গললো না তাতে। হ্যাটট্রিকটাও আর হলো না আফগানদের।
কিন্তু তাতে কী, হ্যাটট্রিক না পাওয়ার দুঃখকে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দিলেন না খোদ ইংলিশ ব্যাটসম্যান জো রুটই। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে সেই মোহাম্মদ নবীর হাতেই রানআউটের খাঁড়ায় কাটা পড়লেন। এক ওভারে, ৪ বলের ব্যবধানে তিনজন ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখিয়ে দিল আফগান বোলাররা। মূলতঃ এভাবেই আফগানদের সামনে রীতিমত অসহায় হয়ে পড়েছে শিরোপা প্রত্যাশী ইংল্যান্ড।
নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় মুখোমুখি ইংল্যান্ড এবং আফগানিস্তান। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান। ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় ওভারের শেষ বলেই জ্যাসন রয়ের উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। আমির হামজার বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৬ষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে জেমস ভিন্স রিটার্ন ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ নবীর হাতে।
পরের বলে নবীর ঘূর্ণি বলটি বুঝতেই পারেননি ইয়ন মরগ্যান। ব্যাট উঁচিয়ে ছেড়ে দিতে চাইলেন। কিন্তু বল সরাসরি আঘাত হানলো তার স্ট্যাম্পে। এরপর হ্যাটট্রিক চান্সটা আম্পায়ার এস রবির কারণে পেলেন না নবী। তবে পরের বলেই রান আউট হয়ে গেলেন জো রুট। ৯ম ওভারের প্রথম বলে রশিদ খানের বলে মাটি কামড়ানো ক্যাচ তালুবন্দী করেন মোহাম্মদ নবী। অথ্যাৎ ৫০ রানেই নাই হয়ে যায় ইংল্যান্ডের ৫ উইকেট।
এরপর ৫৭ এবং ৮৫ রানের মাথায় আরও দুই উইকেটের পতন। এরপরই ইংলিশরা ঘুরে দাঁড়ায়। মঈন আলির ৩৩ বলে ৪১ রানের ইনিংসটিতে ছিল ৪টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মার। উইলি মারেন ২টি ছক্কা। মোহাম্মদ নবি এবং রশিদ খান নেন ২টি করে উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন আমির হামজা এবং সামিউল্লাহ সেনওয়ারি।
আইএইচএস/আরআইপি