মালদ্বীপে বাংলাদেশি লিটনকে হত্যার পর সাগরে ফেলে দেওয়া হয়
মালদ্বীপ প্রবাসী লিটন (৩৫) হত্যা মামলায় দেশটির নাগরিক মোহাম্মদ নিজামের (৪৫) বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। এতে বলা হয়, অর্থ আত্মসাত করতে লিটনকে হত্যা করে সাগরে ফেলে দেয় তার সহকর্মী মালদ্বীপের ওই নাগরিক।
শুক্রবার (৩ মার্চ) মালদ্বীপের একটি ফৌজদারি আদালতে একমাত্র আসামি নিজামকে হাজির করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর আগে, তাকে ৬০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল পুলিশ।
প্রসিকিউটর জেনারেলের অফিসের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দীর্ঘ তদন্ত শেষে নিজামের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক হত্যাসহ ৩টি অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে এ হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়। নৌকায় রাখা লিটনের ৫১ হাজারেরও বেশি মালদ্বীভিয়ান রুপি আত্মসাৎ করে নিজাম।
লিটনের পরিবার ও খালাতো ভাই জিল্লুর রহমান জানান, বাংলাদেশি লিটন জ্বালানি তেল সরবরাহের বোটে (নৌকা) কাজ করতেন। সমুদ্রপথে এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে তেল সরবরাহ করতেন। মালদ্বীপের নাগরিক মোহাম্মদ নিজাম (৪৫) তার সহকর্মী এবং ওই জ্বালানি তেলের নৌকায় কাজ করতেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর লিটন নিখোঁজ হন। ওই দিন থেকে নিজামও নিরুদ্দেশ হন। ৩১ ডিসেম্বর দুজনের খোঁজে স্থানীয় পুলিশ টুইট করে। সর্বশেষ ৫ জানুয়ারি মালদ্বীপের রাজধানী মালের একটি গেস্ট হাউজে নিজামকে পাওয়া যায়। কিন্তু, বাংলাদেশি লিটনের খোঁজ মেলেনি।
মালদ্বীপ পুলিশ বলছে, নিজামকে যেদিন পাওয়া যায় সেদিনই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে লিটনের নিখোঁজ মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।
প্রসিকিউটরের অফিস বলেছে, নিজামের ভাড়া করা একটি রুম থেকে পুলিশ ৩ দশমিক ২৫ গ্রাম ডিমরফিন উদ্ধার করার পর তার বিরুদ্ধে মাদক পাচারেরও অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ আরও বলেছে, এর আগে ২০০৮ সালে থিনাধু থেকে মাদক ও চুরির অপরাধে নিজামকে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই বছরই মাদক সংক্রান্ত মামলায় তাকে তিনবার গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর, ২০১৪ সালে চুরি ও মাদকের জন্য দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন নিজাম। ২০১৫ সালে মাদক সেবন এবং গত ৩ বছরে চুরির একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার হন নিজাম। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
নিহত লিটন জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার আমানপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে। তিনি গত বছরের ডিসেম্বরে কর্মস্থল থেকে নিখোঁজ হন। এরপর তার আরও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এমআরএম/এএসএম
