মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায়

আহমাদুল কবির
আহমাদুল কবির আহমাদুল কবির , মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:২৪ পিএম, ২০ জুন ২০১৯

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক বর্তমানে শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বীকার করা প্রথম দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া অন্যতম। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দেশ দুটির পারস্পরিক সহযোগিতার হাতও সুদৃঢ়। উভয় দেশ কমনওয়েলথ অব নেশনস, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন, উন্নয়নশীল ৮টি দেশ, জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের সদস্য।

অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ মালয়েশিয়া। বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির বড় বাজারও দেশটি। প্রায় আট লাখের বেশি বাংলাদেশি সেখানে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। প্রবাসী বাংলাদেশিরা হোটেল-রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় ব্যাপক সফলতার পরিচয় দিচ্ছেন। সেকেন্ড হোম হিসেবে কয়েক হাজার অ্যাপার্টমেন্ট ও ফ্ল্যাট কিনে রেখেছেন বাংলাদেশি বিত্তশালীরা।

বিজ্ঞাপন

শুধু হোটেল-রেস্টুরেন্টই নয়, জমি-জমা লিজ নিয়ে কৃষি খামার বা ডেভেলপমেন্ট ব্যবসা, স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা, হোম সার্ভিস, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, গাড়ি বেচাকেনা বা ভাড়ায় ব্যবসা, আইটি ব্যবসা, ফাস্ট ফুড, কফি সপসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করছেন অনেক বাংলাদেশি।

southeast

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমান সময়ে দু’দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। যা থেকে দু’দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক আঁচ করা যায়। মালয়েশিয়ায় সম্ভাবনাময় ব্যবসা বাণিজ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন চেইন শপের ফ্যাঞ্চাইজি, ল্যাঙুয়েজ সেন্টার, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অফিস স্থাপন, সেলুন দোকান, কারওয়াশ, রেন্ট-এ কার, সাইবার ক্যাফে, মোবাইল লোড-ফটোকপির দোকান, টেইলারিং শপ, ফলের দোকান, প্রিন্টিং ব্যবসা ইত্যাদি। এ ছাড়াও কিছুটা বড় পরিসরে জমি লিজ নিয়ে সবজি আবাদ/কৃষি খামার, মৎস্য চাষের মতো ব্যবসা করা যায়।

উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মালয়েশিয়া। ২০২০ সালের মধ্যে এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া।

southeast

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

উভয় দেশ তাই নিজেদের মধ্যে দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রগুলো ক্রমশ সম্প্রসারিত করছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ৯৩টি অর্থনৈতিক এলাকা গড়ে তুলেছে। যাতে অবকাঠামোসহ সব ধরনের সমস্যা দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে দেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আহ্বানও জানিয়েছেন।

গত ২২ এপ্রিল মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দীন আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বৈঠকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, মালয়েশিয়ার সরকার বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ ও কাজ উভয়ই সহজ করে দিচ্ছে। সব নিয়মশৃঙ্খলা অনুযায়ী হবে। আর এ সহজীকরণে একটি স্বাধীন কমিটি কাজ করছে।

মন্ত্রী বলেন, বিদেশি কর্মীরা যাতে করে স্বল্প খরছে নিশ্চিন্তে কাজে যোগদান করতে পারে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দ্বারা প্রতারণার শিকার না হয়। শাহরিয়ার আলম দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া কো-অপারেশনের (সায়াকো) মাধ্যমে মালয়েশিয়ার সমর্থন অর্জনের জন্য কুয়ালালামপুরে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

southeast

বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে নব উন্মেষ এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে শাহরিয়ার আলম মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং হচ্ছে। এজন্য মালয়েশিয়া সরকারের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে সোর্স কান্ট্রি করে শ্রম নিয়োজন শুরু করেছে। যারা বৈধতা-সংক্রান্ত সমস্যায় আছে তাদের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য অনুরোধ করেন। তিনি আশা করেন মালয়েশিয়া সরকার দ্রুত নবনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করবে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দীন আবদুল্লাহ আশা প্রকাশ করে বলেন, নিয়মকানুন ও পলিসি সংশোধন করে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলার পুনরাবৃত্তি হোক তা মালয়েশিয়া সরকার চায় না।

বৈঠকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের নির্যাতিতরা বিপুল পরিমাণে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং বাংলাদেশ এসব অসহায় লোকদের পাশে থেকে যে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তাতে সাধুবাদ জানিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দেন।

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নতি করছে। আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রেখে যাবে।

বিজ্ঞাপন

southeast

শাহরিয়ার আলম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধতা পেয়েছে।
বৈঠকে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি (ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন) এএফএম গৌছুল আজম সরকার এবং সেস্কো ফাউন্ডেশনের নির্বাহী চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

শাহরিয়ার আলম বলেন, এটি একটি বেসরকারি খাত এবং ট্র্যাক -২ লেভেল ফোরাম। এই অঞ্চলের পাঁচটি ওআইসি দেশ-বাংলাদেশ, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং মালদ্বীপ আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রগতিকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

সদস্য দেশ ও তাদের আশপাশের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সহযোগিতার এজেন্ডা নিয়ে বিশ্ব ইসলামী অর্থনৈতিক ফোরাম (ডাব্লুআইইএফ) মডেলে কাজ করবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং জনসাধারণের ও বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করছে। বিদেশি মন্ত্রীদের প্রত্যাশিত অংশগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে চলতিমাসে ঢাকায় সিএইচওএর উদ্বোধনী সম্মেলনের আয়োজন করার জন্য প্রস্তত।

মালয়েশিয়ায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য গ্যাপ অনেক বেশি যা মালয়েশিয়ার অনুকূলে। বাংলাদেশি বেশি বেশি পণ্যের প্রবেশাধিকার দিলে এ বৈষম্য কমে যাবে।
তিনি আশা করেন মালয়েশিয়া সরকার বাণিজ্য ভারসাম্য রক্ষা করার পদক্ষেপ নেবেন। মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ী এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ এবং চেম্বারের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করেছেন।

southeast

রোহিঙ্গা বিষয়ক আলোচনায় মালয়েশিয়া আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান হওয়ায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসনে মালয়েশিয়া সরকার গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান।

এ ছাড়া দুই দেশই পরস্পরের মধ্যে পর্যটন, সংস্কৃতি, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলাদেশ ও আসিয়ানের মধ্যকার সম্পর্কগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, আসিয়ানের ডায়লগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতিতে অনেক ভাল ভূমিকা পালন করছে। এ ছাড়া দেশের ইকোনমিতে রয়েছে অপার সম্ভাবনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেক্সটাইল, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও কৃষিভিত্তিক শিল্পের মতো বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার বিনিয়োগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন যে, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে অগ্রগতি জোরদারে উভয় দেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে নিয়মিত আলোচনায় বসতে সম্মত রয়েছেন। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। বাংলাদেশ যে প্রবৃদ্ধির পথে হাটছে। সেখানে প্রধান অন্তরায় বিনিয়োগ সঙ্কোচন।

তিনি বলেন, তাই দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বিনিয়োগ বাড়লে চলতি অর্থবছরেই ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব। স্বল্প পুঁজিতে নিরাপত্তার মধ্যেই ব্যবসা করার পরিবেশ আছে মালয়েশিয়ায়। অবশ্য কেউ কেউ হয়রানির শিকারও হচ্ছেন। তবে এর সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।

southeast

জানা যায়, প্রবাসী বাংলাদেশিরা হোটেল-রস্টুরেন্ট ব্যবসায় ব্যাপক সফলতার পরিচয় দিয়েছেন। মালয়েশিয়া প্রবাসী ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক কোম্পানির অধীনে বিজনেস রেসিডেন্স ভিসা করলে পাঁচ বছর পরে মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব (পিআর) পাওয়া যায় সহজেই। ২ বছর পর পর ভিসা নবায়ন করে আজীবন বসবাস করা যায়। ৫ বছর পর স্থায়ী নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়।

গত কয়েক বছরে অন্তত ৫ হাজার বাংলাদেশি স্থায়ী নাগরিকত্ব পেয়েছে বলেও জানা যায়। বিশ্বে প্রযুক্তি ও যান্ত্রিক বিকাশ ঘটছে দ্রুত। উন্নত বিশ্ব এবং চীনসহ অনেক উদীয়মান অর্থনীতিতেই শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাই তারা জনশক্তির বিকল্প হিসেবে প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারকে প্রাধান্য দিচ্ছে। অদক্ষ বা স্বল্পদক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে।

বাংলাদেশের জনশক্তিকে দক্ষ করে তুলতে না পারলে এক সময় দেশ বৈদেশিক শ্রমবাজার হারাবে। নিম্ন উৎপাদনশীল শ্রমশক্তিকে সময়োপযোগী শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও ইন্টার্নশিপ করিয়ে উচ্চ উৎপাদনশীল জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের যথাপযুক্ত অবকাঠামো গড়ে তোলা।

এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন ও মানবসম্পদ মন্ত্রী কুলাসেগারান, সারোয়াকের চীফ মিনিস্টার, মালয়েশিয়ার সরকার দলীয় পাকাতান হারাপানের প্রধান আনোয়ার ইব্রাহীম ও সেদেশের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।

পৃথক পৃথক বৈঠকে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে আমাদের সম্প্রীতির সম্পর্ক। দেশটির জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্তসহ দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ শ্রমিকদের বিষয়ে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৈঠকে অংশ নেয়া মালয়েশিয়ার একজন মন্ত্রী বলেছেন, অবৈধদের বৈধ করে নেয়া এবং যারা দেশে যেতে চায় তাদের নামমাত্র ‘ফি’ দিয়ে দেশে যাওয়ার বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। মালয়েশিয়া সরকার এখন বাংলাদেশসহ সোর্স কান্ট্রি হিসেবে ১৫টি দেশ থেকে ইউনিফাইড সিস্টেমে শ্রমিক নিতে আগ্রহী। অল্প অভিবাসন ব্যয় এবং সরকারের তালিকাভুক্ত সব রিক্রুটিং এজেন্সি যাতে সমানভাবে ব্যবসা করতে পারে সেদিকটিও আলোচনায় এসেছে।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বলেছেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আজ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। দু,দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান। তার ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে সকলে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আজ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন রকম সেবা দ্রুত ও সহজে প্রদান করার জন্য দূতাবাস আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত মালয়েশিয়ায় অভিবাসী বাংলাদেশিদের মালয়েশিয়ার আইন-কানুন মেনে চলতে অনুরোধ করেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন করছে তার স্বীকৃতি আমরা পাচ্ছি বিভিন্ন বিদেশিদের কথায় ও আচরণে। আমাদের সবার দায়িত্ব এ উন্নয়নের চাকাকে আরো গতিশীল করা। এক্ষেত্রে প্রবাসী ভাইদের অবদান অনেক বেশি। প্রবাসীরা শুধু কাজই করে না বাংলাদেশকেও প্রতিনিধিত্ব করে।

হাইকমিশনার আরও বলেছেন ‘বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ মালয়েশিয়া সরকার আড়াই বছর ধরে বৈধতার সুযোগ দিয়েছে। এ বৈধকরণ প্রকল্পে প্রায় ৬ লাখ অভিবাসী নিবন্ধন করেছিল, এদের মধ্যে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার বৈধতা পেয়েছে। বাকি যারা আছেন তারা কোম্পানির বিভিন্ন সমস্যার কারণে বৈধ হতে পারেনি। আমরা মালয়েশিয়ার সরকারকে অনুরোধ করেছি তাদেরকেও বৈধ করে নেয়ার জন্য। ফলে তাদের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

তিনি বলেন প্রবাসে যারা বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত তাদের প্রবাসীর সমস্যায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। যৌথ প্রয়াসে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব। এভাবেই মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করা যাবে।

এমআরএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - jagofeature@gmail.com