তোমাকে ভুলতে আজ আমি প্রবাসে

আমি পুরোদমে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করি। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও মাহফুজার কথা ভুলতে পারি না। দু’জনার চিঠি চালাচালি হতো। মাঝে মাঝে গোপনে দেখা করি। আমি চাই দুটি পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে হোক। তাই মাহফুজাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তাও করিনি।
যথাসময়ে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো রেজাল্ট করি। এবার আবারো মাহফুজাকে বিয়ে করার জন্য পাগলামো শুরু করে দেই। কিন্তু মা বাবার একই কথা আমরা একবার গিয়ে অপমানিত হয়েছি আর যেতে পারব না। ওরা যদি নিজে মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে তাহলে আমাদের এ বিয়েতে অমত নেই।
আমি মাহফুজাকে মা-বাবার কথা বলি সে বলে, আমার মা-বাবা বরং আমাকে কেটে টুকরো টুকরো করে সাগরে ভাসিয়ে দেবে তবুও তোমার কাছে বিয়ে দিবে না। তার কথায় ব্যথিত হই। কিছুদিন পর মাহফুজা খবর পাঠায় আমি যেন তার সাথে আমার বোনের বাড়ি গিয়ে দেখা করি। আমি বার্তা বাহককে অপমান করে বলি, তাকে গিয়ে বলো আমি ব্যস্ত তার সাথে দেখা করার সময় নেই।
তখন রাগের মাথায় এ কথা বলেছিলাম। একমাস পর নিজেকে অপরাধি মনে হয়। ক্ষমা চেয়ে তাকে চিঠি দেই। কিন্তু চিঠির কোনো জবাব আসে না। একের পর এক চিঠি দেই কিন্তু তার কাছ থেকে কোনো জবাব না পেয়ে হতাশ হয়ে যাই। সিদ্ধান্ত নেই বিদেশ যাব। মা-বাবাকে বললে তারা রাজি হয়। কারণ তারা জানে আমি দেশে থাকলে মাহফুজার চিন্তায় পাগল হয়ে যাব। সবকিছু খুব দ্রুত হয়ে যায়। মাহফুজার সাথে দেখা না করে এমনকি তাকে না জানিয়ে প্রবাসে চলে আসি। বলা যায় তাকে ভুলতেই আমার এমন সিদ্ধান্ত।
প্রবাসে আসার পর নতুন পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়াতে ছয় মাস কেটে যায়। মাঝে মাঝে মাহফুজার কথা খুব মনে পড়ত কিন্তু কর্মব্যস্ততায় সব ভুলে যাই।
আজ আট বছর হলো প্রবাসে এসেছি। বাড়ি থেকে চাপ দিচ্ছে দেশে গিয়ে বিয়ে করার জন্য। বিয়ের প্রসঙ্গ আসার পর মাহফুজার কথা মনে পড়ে যায়। তাকে ছাড়া অন্য কোনো মেয়েকে জীবন সঙ্গী হিসেবে কল্পনাও করতে পারি না।
আমার চাচাতো বোনের নম্বর যোগাড় করে কল দেই। আপাকে জিজ্ঞেস করি মাহফুজা কি এই বাড়িতে আসে? আপা বলে না অনেকদিন আসেনি। আপাকে অনুরোধ করে বলি সে যেন মাহফুজার খবর আমাকে দেয়। তার কি বিয়ে হয়েছে? সে এখন কি করে এই সমস্ত খবর। আপা আমাকে আশ্বাস দিয়ে বলে সে মাহফুজার খবরা খবর জানাবে।
একমাস পর আপা একটা মোবাইল নম্বর দিয়ে বলে এটাতে কল দিলে মাহফুজাকে পাবি।
চলবে…
এমআরএম/এমকেএইচ