লন্ডনে গণহত্যা দিবস পালন

প্রবাস ডেস্ক
প্রবাস ডেস্ক প্রবাস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩৮ এএম, ২৮ মার্চ ২০২৩

লন্ডনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যেগে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় গণহত্যা দিবস ও আলোর সমাবেশ পালন করা হয়েছে। শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশ।

এ সময় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসর আলবদর-রাজাকার-জামায়াত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে সবচেয়ে বড় গণহত্যা সংঘটিত করে। হত্যা করে ৩০ লাখ বাঙালি নারী-পুরুষ, ইজ্জত হরণ করে দুই লাখ বাঙালি নারীর। একাত্তরের ২৫ মার্চ ঢাকায় প্রথম প্রহরেই হত্যা করে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ। পবিত্র রোজার মাসে ও এই বর্বর বাহিনী হাজার হাজার রোজাদার মুসলমানকে হত্যা করেছে।

তারা বলেন, পাকিস্তানিদের এসব কলঙ্কিত ইতিহাস আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। সেই সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসব প্রচার হলেও স্নায়ুযুদ্ধের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন গণহত্যাকারী পাকিস্তানিদের কেবল সহযোগিতাই করেনি, গণহত্যার রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভে বিভিন্নভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। ১৯৭৫ সালের প্রতিবিপ্লব ও জাতির জনককে হত্যা এবং পরবর্তী দুই দশক পাকিস্তানপন্থি শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বিলম্বিত হয়। তাই দেশে-বিদেশে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতিসংঘের সেই স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।

একই সাথে লন্ডনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের খলনায়কদের ও বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে আদালতের রায় বাস্তবায়নের জন্য সরাকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।

যুক্তরাজ্য ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি জামাল খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুনিরা পারভীনের পরিচালনায়, লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে, সংগঠনের নেতারা ছাড়া ও সমবেত হয়েছিলেন বিভিন্ন পেশার লোকজন।

বিবেক হোক জাগ্রত ঘৃণিত হোক ঘাতক যত স্লোগান নিয়ে প্রতি বছরের মতো পালিত হয়েছে দিবসটি। আলোর সমাবেশে সমবেত হয়েছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশিনের পক্ষে, এস কে মো. শাহরিয়ার মোশাররফ পলিটিক্যাল মিনিস্টার বাংলাদেশ হাই কমিশন। শিক্ষাবিদ মো. শওকত আলী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং ইউরোপিয়ান ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনসার আহমেদ উল্লাহ, কিটন সিকদার, আব্দুল আহাদ, কাউন্সিলর মঈন কাদরী, আনিসুর রহমান আনিস, সাবেক স্পিকার আহবাব হোসেন, সাংবাদিক রাসেল, খালেদ চৌধুরী, মি ওয়ারেন, লন্ডনে সফররত জিডিএনসির সহ-সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক সামির মাহমুদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাবেক সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলাম, প্রশান্ত পুরকায়স্থ, মোস্তফা কামাল মিলন, স্মৃতি আজাদ, জুয়েল রাজ, শাহ মোস্তাফিজুর রহমান বেলাল, সুশান্ত দাশ প্রশান্তসহ অনেকে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক নির্মম গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে দিবসটি পালন করা হয়। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অন্তর্জাতিকভাবে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

এরই মধ্যে এই অপরাধযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জেনোসাইড ওয়াচ এবং লেমকিন ইন্সটিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন। এছাড়া সংস্থা দুটি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যাকে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

এমআরএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]