মুহাম্মাদের (সা.) জন্মের সময় যা ঘটেছিল

ওমর ফারুক ফেরদৌস
ওমর ফারুক ফেরদৌস ওমর ফারুক ফেরদৌস , আলেম ও লেখক
প্রকাশিত: ১১:২১ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিশ্বনবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন মক্কার শিবে বনু হাশিম-এ সুবহে সাদিকের সময়। সেদিন ছিল সোমবার। সহিহ সূত্রে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) নিজেই জানিয়েছেন, তিনি সোমবার জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আবু কাতাদা আনসারি (রা.) বলেন,

سُئِلَ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَوْمِ يَوْمِ الِاثْنَيْنِ قَالَ : ذَاكَ يَوْمٌ وُلِدْتُ فِيهِ ، وَيَوْمٌ بُعِثْتُ - أَوْ أُنْزِلَ عَلَيَّ فِيهِ

রাসুলকে (সা.) প্রতি সোমবার রোজা রাখার কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এ দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এ দিনে আমাকে নবুওয়াত প্রদান করা হয়েছে অথবা এ দিনে আমার উপর ওহি অবতীর্ণ হয়েছে। (সহিহ মুসলিম: ১১৬২)

প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী দিনটি ছিলো রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ। এই মত পোষণ করেছেন তার সাহাবি ইবনে আব্বাস (রা.) ও জাবের (রা.)। নবিজির (সা.) প্রথম জীবনীকার ইবনে ইসহাকের মতও এটি।

রাসুলের (সা.) জন্মের সময় তার মা আমিনা দেখেছিলেন, তার সামনে এমন একটি জ্যোতি উদ্ভাসিত হয়েছে, যার আলোয় শামের রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত আলোকিত হয়ে উঠেছে। ইরবাজ ইবনে সারিয়া থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন,

إِنِّي عِنْدَ اللَّهِ مَكْتُوبٌ: خَاتَمُ النَّبِيِّينَ وَإِنَّ آدَمَ لِمُنْجَدِلٌ فِي طِينَتِهِ وَسَأُخْبِرُكُمْ بِأَوَّلِ أَمْرِي دَعْوَةُ إِبْرَاهِيمَ وَبِشَارَةُ عِيسَى وَرُؤْيَا أُمِّي الَّتِي رَأَتْ حِينَ وَضَعَتْنِي وَقَدْ خَرَجَ لَهَا نُورٌ أَضَاءَ لَهَا مِنْهُ قُصُورُ الشَّامِ

আল্লাহ তাআলার কাছে আমি তখনো শেষ নবি হিসেবে লিপিবদ্ধ ছিলাম যখন আদম (আ.) মাটির সাথে মিশে ছিলেন। আমার নবুয়তের প্রথম প্রকাশ ঘটে ইবরাহিমের (সা.) দোয়া এবং ইসার (আ.) ভবিষ্যদ্বাণীর মাধ্যমে আর আমার মায়ের স্বপ্নে; তিনি আমাকে প্রসবকালে দেখেছিলেন, তার সামনে একটি জ্যোতি উদ্ভাসিত হয়েছে যার আলোয় সিরিয়ার রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত আলোকিত হয়ে উঠেছে। (মুসনাদে আহমাদ: ১৭১৯১)

এ ছাড়া নবিজির (সা.) জন্মের সময় কিসরার রাজপ্রাসাদের স্তম্ভ ধ্বসে পড়া, অগ্নিপূজকদের আগুন নিভে যাওয়াসহ কিছু অলৌকিক ঘটনা ঘটেছিলো বলে প্রসিদ্ধ থাকলেও এগুলোর নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র পাওয়া যায় না।

জন্মের পর নবজাতক মুহাম্মাদকে (সা.) দাদা আব্দুল মুত্তালিবের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি তাকে দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হন। তাকে নিয়ে কাবায় প্রবেশ করেন, একটি দুম্বা জবাই করেন এবং তার নাম রাখেন ‘মুহাম্মাদ’ অর্থাৎ প্রশংসিত।

নবিজির (সা.) চাচারাও তার জন্মের খবরে অত্যন্ত আনন্দিত হন। যে দাসী নবিজির (সা.) চাচা আবু লাহাবকে তার জন্মের সংবাদ দিয়েছিলো, তিনি তাকে মুক্ত করে দেন। তার নাম ছিল সুওয়াইবা। সুওয়াইবা রাসুলের (সা.) প্রথম দুধ-মা; হালিমা সাদিয়ার (রা.) দায়িত্বে দেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনিই রাসুলকে (সা.) দুধপান করান।

ওএফএফ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।