আজানের পর হাত তুলে দোয়া করা কি সুন্নত?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১০ পিএম, ০২ মে ২০২৪

আজানের দোয়া হাত না তুলে পড়াই সুন্নত। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তার সাহাবিরা আজানের পর হাত তুলে দোয়া করতেন না। তাই এ দোয়ার সময় হাত তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে যদি আজানের দোয়া ছাড়া এমনিতে নিজের কোন প্রয়োজনে দোয়া করে, তাহলে সেই দোয়ায় হাত তুললে কোনো সমস্যা নেই। হাদিসে এসেছে, আজানের পর থেকে একামত পর্যন্ত সময়টুকু দোয়া কবুলের বিশেষ সময়। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

الدُّعَاءُ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ لاَ يُرَدُّ

আজান ও ইকামতের মাঝে যে দোয়া করা হয়, তা ফেরত দেয়া হয় না। (সুনানে আবু দাউদ)

স্মর্তব্য যে, আজানের পর দোয়া পড়া সুন্নত ও ফজিলতপূর্ণ আমল। বিভিন্ন হাদিসে আজানের পর দোয়া পড়ার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, আজান শুনে যে ব্যক্তি নিম্নোক্ত দোয়া পড়ে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়:

وَأَنَا أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا

উচ্চারণ: ওয়া আনা আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা-ল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু রাজিতু বিল্লাহি রাব্বা ওয়া বি মুহাম্মাদিন রাসুলা ওয়া বিলইসলামি দীনা।

অর্থ: এবং আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। তার কোনো শরিক নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার বান্দা ও রাসুল, আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, মুহাম্মাদকে রাসুল হিসেবে এবং ইসলামকে দীন হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট। (সুনানে আবু দাউদ)

আজানের সময় অযথা কথাবার্তা না বলে আজান শোনা ও আজানের জবাব দেওয়াও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। আজানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি হলো মুআজ্জিন যা বলে তা বলা, শুধু ‘হাইয়া আলাস সালাহ, হাই য়ালাস ফালাহ’ বললে এর জবাবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ পড়তে হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ ثُمَّ صَلُّوا عَلَيَّ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا ثُمَّ سَلُوا اللَّهَ لِيَ الْوَسِيلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ لَا تَنْبَغِي إِلَّا لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ لِيَ الْوَسِيلَةَ حَلَّتْ عَلَيْهِ الشَّفَاعَةُ

তোমরা মুয়াজ্জিনের আজান শুনলে উত্তরে সে শব্দগুলোরই পুনরাবৃত্তি করবে। আজান শেষে আমার ওপর দরুদ পাঠ করবে। কারণ যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে (এর পরিবর্তে) আল্লাহ তার ওপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। এরপর আমার জন্য আল্লাহর কাছে ’ওয়াসিলা’ প্রার্থনা করবে। ’ওয়াসিলা’ হলো জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে শুধু একজন পাবেন। আর আমার আশা এ বান্দা আমিই হব। তাই যে ব্যক্তি আমার জন্য ’ওয়াসিলা’র দোয়া করবে, কেয়ামতের দিন তার জন্য সুপারিশ করা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে পড়বে। (সহিহ মুসলিম: ৩৮৪)

ওএফএফ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।