মাদিনা মুনাওয়ারার বৈশিষ্ট্য ও সীমানা


প্রকাশিত: ০৯:৫৬ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৬

মাদিনা মুনাওয়ারা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত নিরাপত্তার শহর। পবিত্র নগরী মক্কার মতো এ শহরের নির্ধারিত স্থানেও অন্যায় কাজ করা যায় না, এমনকি হালাল প্রাণী শিকার এবং হত্যা, রক্ত প্রবাহ এবং গাছ কাটা হারাম। মাদিনা মুনাওয়ারার প্রতিষ্ঠা বৈশিষ্ট্য ও তাঁর সীমানা তুলে ধরা হলো-

মাদিনার বৈশিষ্ট্য
মসজিদে হারামে নামাজ আদায় করলে যেমন অনেক সাওয়াব পাওয়া যায়; তেমনি মসজিদে নববিতে নামাজ পড়লেও অধিক সাওয়াব পাওয়া যায়। সুতরাং মাদিনা মুনাওয়ারায় পাপের কাজ ত্যাগ করে ইবাদাত বন্দেগিতে মশগুল হওয়া উচিত।

পবিত্র নগরী মক্কার মতো মাদিনার নির্ধারিত জায়গায় হত্যা, মারামারি, যুদ্ধ-বিগ্রহ, দ্বন্দ্ব-কলহ করাও হারাম। এমনকি মাদিনার নির্ধারিত সীমানায় হালাল প্রাণী শিকার, গাছ ও ঘাস কাটাও হারাম। বিধায় এ সকল কাজগুলো থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

মাদিনার প্রতিষ্ঠা ও মর্যাদা
মাদিনার প্রতিষ্ঠা এবং মর্যাদার কথা স্বয়ং বিশ্বনবি ঘোষণা করেছেন, হাদিসে এসেছে- হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘(হজরত) ইবরাহিম (আলাইহিস সালাম পবিত্র নগরী) মক্কাকে হারাম ঘোষণা করেছেন আর আমি মাদিনার দুই হাররা (কালো প্রস্তরময় ভূমি)-এর মাঝের স্থানকে হারাম ঘোষণা করছি। তার গাছ কাটা যাবে না এবং শিকারী পশুকে শিকার করা যাবে না।’ (মুসলিম)

মাদিনার হারামের সীমানা
পূর্ব দিকে হাররা (কালো প্রস্তরময় ভূমি) পর্যন্ত; পশ্চিম দিক থেকে পশ্চিম হাররা; উত্তর দিক থেকে উহুদ পর্বতের পিছনে সাওর পর্বত পর্যন্ত এবং দক্ষিণ দিক থেকে ‘আ’য়ির’ পর্বত পর্যন্ত, যার উত্তর পাদদেশে আকিক উপত্যকা অবস্থিত।

হারাম সীমানার হুকুম
মাদিনার এ সীমানার মধ্যে গাছ কাটা হারাম ও শিকারের উদ্দেশ্যে পশু ভাগানো চলবে না। মক্কার পশু শিকারে পাপ রয়েছে এবং বদলা দিতে হবে। আর মাদিনার নির্ধারিত সীমানায় পশু শিকার করলে পাপ হবে কিন্তু বদলা দিতে হবে না।

হাদিসে এসেছে-
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মাদিনার হারাম হলো- আ’য়ির থেকে অমুক পর্যন্ত। যে এর নির্ধারিত সীমানার মাঝে কোনো প্রকার পাপ করবে অথবা কোনো পাপীকে আশ্রয় দিবে তার প্রতি আল্লাহ, ফেরেশতা ও সমস্ত মানুষের অভিশাপ। আর তার কোনো ফরজ-নফল ইবাদাত কবুল করা হবে না।
তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, মুসলমানদের এক জনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা প্রদান মানে সবার পক্ষ থেকে (নিরাপত্তা প্রদান)। অতএব, যে কোনো মুসলিমের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে তার প্রতি আল্লাহ ফেরেশতা ও সমস্ত মানুষের অভিশাপ। আর তার কোনো ফরজ-নফল ইবাদাত কবুল করা হবে না।
আর যে ব্যক্তি কোনো জাতির দায়িত্বভার গ্রহণ করে তাদের অভিভাকবৃন্দের জিম্বাদারি ছাড়া তার প্রতি আল্লাহ, ফেরেশতা ও সমস্ত মানুষের অভিশাপ। আর তার কোনো ফরজ-নফল ইবাদাত কবুল করা হবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)

পরিশেষে...
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হজ, ওমরা ও যিয়ারাতের উদ্দেশ্যে মুসলিম উম্মাহ পবিত্র নগরী মক্কা ও নবির শহর মাদিনায় উপস্থিত হয়। এ উভয় স্থানে যে কোনো প্রকার অন্যায়সহ হালাল পশু শিকার করা এবং কষ্টদায়ক কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ কাটাতে বিরত থাকা আবশ্যক কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উভয় স্থানে নির্ধারিত সীমানায় উল্লেখিত কার্যাবলী থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। বিশেষ করে নবির শহর মাদিনার সম্মান ও মর্যাদার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বনবির শাফায়াত লাভের সৌভাগ্য দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।