জ্ঞান অন্বেষণকারীর জন্য জান্নাত


প্রকাশিত: ০৩:১৯ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৫

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন বিশ্বমানবতার মহান শিক্ষক। বিদায় হজের ভাষণে তিনি বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি, একটি হলো কিতাবুল্লাহ তথা আল্লাহর কিতাব-কুরআন, আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে সুন্নাতি তথা আমার সুন্নাত-হাদিস। যত্ক্ষণ তোমরা তা আঁকড়ে ধরবে ততক্ষণ পথভ্রষ্ট হবে না। বর্তমান সমাজের নানাহ কলহ-বিবাদ থেকে হেফাজত থাকার জন্য আমাদেরকে কুরআন-হাদিসের কাছে ফিরে আসতে হবে। এটাই ঈমানের দাবি। যে ব্যক্তি কুরআন-হাদিসের জ্ঞান অর্জন করবে গোমরাহী তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। কুরআন হাদিসের জ্ঞান অর্জনের মর্যাদা সম্পর্কিত কিছু কথা জাগো নিউজে তুলে ধরা হলো-

হাদিসটি এই-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ قَال أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ{رواه الترمذي

অর্থ- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ইলম (জ্ঞান) অর্জন করার উদ্দেশ্যে পথ চলবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সুগম করে দিবেন। (তিরমিযী)

ইলম অর্জনের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন- ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং আল্লাহ যাদেরকে জ্ঞান দান করেছেন তাদেরকে উচ্চমর্যাদায় উন্নীত করবেন। তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে পূর্ণ অবহিত।’ (সূরা আল-মুজাদালাহ : আয়াত ১১)

অন্য হাদিসে এসেছে
হজরত আবু উমামা আল-বাহিলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে দু’জন লোকের কথা উল্লেখ করা হলো। যাদের একজন আলিম অপরজন আবিদ। তখন তিনি বলেন, আলিমের মর্যাদা আবিদের ওপর। যেমন আমার মর্যাদা তোমাদের সাধারণের ওপর। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই তার প্রতি আল্লাহ রহমত করেন এবং তার ফেরেশতামণ্ডলী, আসমান-জমিনের অধিবাসী, পিপীলিকা তার গর্তে থেকে এবং এমনকি মাছও কল্যাণের শিক্ষা দানকারীর জন্য দোয়া করেন। ( তিরমিজি, মিশকাত)

অন্যত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন
‘যে ব্যক্তি ইলম অর্জন করার উদ্দেশ্যে কোনো পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তা‘আলা তা দ্বারা তাকে জান্নাতের কোন একটি পথে পৌঁছে দেন এবং ফেরেশতাগণ ইলম অন্বেষণকরীর ওপর খুশি হয়ে নিজেদের ডানা বিছিয়ে দেন। এ ছাড়া আলেমদের জন্য আসমান ও জমিনের সকল অধিবাসী আল্লাহর নিকট দোয়া ও প্রার্থনা করে। এমনকি পানির মধ্যে বসবাসকারী মাছও। ( আবুদাউদ, মিশকাত)

হাদিসের শিক্ষা
১. ‘ইলম (জ্ঞান) অর্জন করার সম্মান ও মর্যাদা অত্যধিক।
২. ‘ইলম (জ্ঞান) অর্জনের উদ্দেশ্যে যে পথ চলবে আল্লাহ তার জান্নাতের পথ সুগম ও সহজ করে দেবেন।
৩. এই ইলম হতে হবে আল্লাহ প্রাপ্তির ইলম।
৪. ‘ইলম প্রচার করতে হবে।
৫. ইলম অর্জনকারীর জন্য আল্লাহর অন্যান্য সৃষ্টিও দোয়া করতে থাকেন।

পরিশেষে...

দ্বীনি ইলম অর্জন করা ফরজ। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দ্বীনি ইলমসহ কোনো প্রকারে ইলম অর্জন অন্যায় কাজ। অথচ ইলম অর্জনকারীর মর্যাদা এত বেশি যে ফিরিশতাকূল তাদের চলার পথে নিজেদের ডানা বিছিয়ে দেন। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক বান্দাকে ইলম অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামি আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।