বান্দার প্রতি তাওবার নির্দেশ


প্রকাশিত: ০৯:৫১ এএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আল্লাহর নির্দেশে মুসা আলাইহিস সালাম পাহাড়ে গমন করার পর তাঁর জাতি গো-বাছুরের প্রতিমূর্তির উপাসনা করতে শুরু করে। আসমানি  কিতাব নিয়ে মুসা আলাইহিস সালাম স্বজাতির নিকট ফিরে এসে দেখলেন, তাঁর জাতি শিরকে মতো জঘন্য গোনাহে লিপ্ত হয়েছে। মুসা আলাইহিস সালাম তাঁদেরকে আল্লাহর পথে ফিরে আসতে তাওবার আহবান করলেন। আল্লাহ তাআলা তাওবার বর্ণনা কুরআনে এভাবে উল্লেখ করেন-

Quran-Inner

আর যখন মূসা তার সম্প্রদায়কে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদেরই ক্ষতিসাধন করেছ এই গো-বাছুর নির্মাণ করে। কাজেই এখন তওবা কর স্বীয় স্রষ্টার প্রতি এবং নিজ নিজ প্রাণ বিসর্জন দাও। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর তোমাদের স্রষ্টার নিকট। তারপর তোমাদের প্রতি (ক্ষমা করা হলো) লক্ষ্য করা হলো। নিঃসন্দেহে তিনিই ক্ষমাকারী, অত্যন্ত মেহেরবান। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৫৪)
এ আয়াতে তাওবার পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। মুসা আলাইহিস সালাম তার কাওমকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয়ার অর্থ এই যে, তাঁদেরকে (উম্মাত) যিনি সৃষ্টি করেছেন, তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যের উপাসনা শুরু করেছে, যা মারাত্মক এবং সবচেয়ে বড় জুলুম বা অত্যাচার।

এক বর্ণনায় এসেছে, মুসা আলাইহিস সালাম স্বজাতিকে আল্লাহর নির্দেশ শুনিয়ে দেন এবং যারা গো-বাছুরের পূজা করেছিল তাদেরকে বসিয়ে দেন, অন্যান্য লোকগণ দাঁড়িয়ে গিয়ে তাদেরকে হত্যা করতে শুরু করে। আল্লাহর নির্দেশে ঐ জায়গা অন্ধকারে ছেয়ে যায়। ফলে মানুষ হত্যা বন্ধ হয়। এ সময়ে প্রায় সত্তর হাজার বনি ইসরাইল হত্যা হয়। তারপর তারা তাওবা করলে, সমগ্র গোত্রের তাওবা কবুল হয়। আর ঐ কঠোর নির্দেশ পালন করতে গিয়ে আপন ও পর সবাইকে হত্যা করেছিল। ফলে করুণাময় আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করেছিলেন।

বর্ণনায় এসেছে, যারা জীবিত ছিল আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করেন। আর যারা হত্যা হয়েছিল আল্লাহ তাআলা তাদেরকে শহিদের ছাওয়াব দান করেন।

হজরত মুসা ও হারুন আলাইহিস সালাম হত্যা দেখে আল্লাহর দরবারে এ বলে প্রার্থনা করেছিলেন, ‘হে আল্লাহ! এখন তো বনি ইসরাইল দুনিয়া থেকে নিঃশেষ হয়ে যাবে।’ সুতরাং তাদের জীবিত ও মৃত সবাইকে ক্ষমা করে দেয়া হয়। আল্লাহ বলেন, ‘হে আমার নবিগণ! তোমরা নিহতদের জন্য দুঃখ করো না, তাঁরা আমার নিকট শহিদের মর্যাদা পেয়েছে। তারা জীবিত রয়েছে এবং আহার পাচ্ছে। তখন মৃতদের স্ত্রী, সন্তান-সন্তুতিদের বিলাপ বন্ধ হয়। পিতা-পুত্র-ভাইয়ে-ভাইয়ে রক্তারক্তি বন্ধ হয়ে যায় এবং পরম দয়ালু আল্লাহ তাআলা তাদের তাওবা কবুল করেন।

আল্লাহ তাআলা তাওবাকে ভালোবাসেন। সুতরাং এ আয়াতের শিক্ষা উম্মাতে মুসলিমার জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক বান্দাকে তাঁর নিকট তাওবা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।