‘বাবুলকে ঝুঁকিতে ফেলা হলো’


প্রকাশিত: ০২:৫৬ পিএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

‘বিচারের মালিক আল্লাহ। তারপর রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সরকারের অধীনে চাকরি করতো বাবুল আক্তার। সরকারই যদি না চায় তাহলে আমাদের বিচার চেয়ে লাভ কি। চাকরি ফিরে পেতে তো যুদ্ধ করতে পারি না। স্ত্রী খুনের পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো তাকে। এর মধ্য দিয়ে আত্মীয়-স্বজনসহ বাবুল আক্তারকে ঝুঁকিতে ফেলা হলো। এমনও হতে পারে তাকেও মৃত্যুবরণ করতে হতে পারে।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাবুল আক্তারের পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর খিলগাঁও মেরাদিয়া ভূঁইয়াপাড়ায় ২২০/এ নং বাসায় গেলে জাগো নিউজকে এ প্রতিক্রিয়া জানান তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের মাধ্যমেই বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার খবর পাই। শুনলাম বাবুল আক্তারের চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন গ্রহণ না করে পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

মেয়ের মৃত্যুর পর জামাতার চাকরি থেকে অব্যাহতি। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কি বলবো। বলার ভাষা নাই। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সে কি কারণে চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে স্বাক্ষর করেছিল তা সবারই জানা। আপনারা (সাংবাদিকরা) নিউজ করেছেন। এরপর বাবুল আক্তার চাকরি পুনর্বহাল চেয়ে আইজিপি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করে। এতো কিছুর পর যদি এই রেজাল্ট আসে তাহলে কি বলার থাকে! আমরা তো আর যুদ্ধ করতে পারি না। সরকারের অধীনেই বাবুল আক্তার চাকরি করেছে। সেই সরকারই যদি না চায় তবে আপনি আমি চেয়ে কি লাভ বলেন!’
 
তিনি বলেন, স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার বিষয়টি বিচারাধীন। যদিও এর কোনো আপডেট আমরা জানি না। এর সঙ্গে বাবুলের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা।

বাবুল আক্তার গোয়েন্দা কর্মকর্তা ছিলেন, তিনি জঙ্গিসংশ্লিষ্ট অনেক অভিযান ও মামলার তদন্ত করেছেন। এখন বাবুল আক্তারকে বলা যায় বেকার। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন? প্রশ্নের উত্তরে মোশাররফ বলেন, বাবুল আক্তার এখন ঝুঁকিতে। আত্মীয়-স্বজন আমরা সবাই এখন ঝুঁকিতে। এমনও হতে পারে তার মৃত্যুও হতে পারে।

এটা তো সরকারি চাকরি। প্রাইভেট চাকরি না। আমি চাইলেই সরকার কিংবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বলতে পারি না। তারা না চাইলে রেজাল্ট এমনই হবে।
 
বাবুল আক্তারের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন, না আমাদের সঙ্গে কথা হয়নি। কথা বলে আর কি লাভ। সবই তো সরকার নিজেদের মতো করলো।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু নিহত হন। এ ঘটনার কয়েকদিন পর ‘তদন্তের সুবিধার্থে’ বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ১৫ ঘণ্টা পর রামপুরার শ্বশুরবাড়ি ফেরেন তিনি।
 
তবে এরপর থেকে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে অফিস করেননি বাবুল আক্তার। সম্প্রতি তার চাকরি থাকা না থাকা নিয়ে এক ধরনের রহস্যের সৃষ্টি হয়েছিল। জোর করে পদত্যাগপত্রে তার স্বাক্ষর নেয়ার গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছিল।
 
তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, বাবুলের চাকরির মানসিকতা নেই বলে সে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা জোর করে তাকে চাকরিতে ফেরাতে পারি না।
 
চট্টগ্রাম ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) বাবুল আক্তার গত এপ্রিল মাসে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) হন। ঢাকার পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে যোগদানের প্রথম দিনেই চট্টগ্রামে তার স্ত্রীকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

জেইউ/জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।