হবিগঞ্জের ছেলে রুপু খেলছেন পর্তুগাল জাতীয় দলে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি হবিগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:০৬ পিএম, ০৭ জুলাই ২০২৩

বাংলাদেশ জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫ ও ১৭ দলের সাবেক খেলোয়াড় হবিগঞ্জের সন্তান আশরাফুল মামুন রুপু ইউরোপের দেশ পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।

নিজ দেশে জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলার যখন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, তখন ইনজুরি ও পারফরম্যান্সের ঘাটতির কারণে ক্রিকেট থেকে সরে যেতে হয় তাকে। এরপরই ২০১৮ সালের শেষদিকে উচ্চশিক্ষার জন্য পর্তুগালে পাড়ি জমান রুপু।

কিন্তু ক্রিকেটটা ছাড়তে পারেননি। নেমে পড়েন খেলার মাঠে। তার খেলা নজর কেড়েছে পর্তুগিজ ক্রিকেট বোর্ডের। ফলে রুপুকে ডাকা হয়েছে জাতীয় দলে।

আগামী ১৫ জুলাই থেকে হাঙ্গেরিতে শুরু হতে যাওয়া ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার পুনরায় শুরু হবে। টুর্নামেন্টে পর্তুগিজ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার হিসেবে থাকছেন রুপু।

আশরাফুল আলম রুপু হবিগঞ্জ শহরের নিউ মুসলিম কোয়ার্টার এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার মো. আব্দুল মোনায়েম ও মা মরহুমা আশরুফা সুলতানা। গ্রামের বাড়ি বানিয়াচং উপজেলার মিয়াখানী মহল্লায়।

রুপুর পর্তুগিজ জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার খবর হবিগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গনসহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে সব মহলে আনন্দ বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছেন রুপু।

পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে আশরাফুল আলম রুপু বলেন, আমার খুবই ভালো লাগছে। আমার পরিবারের লোকজনও খুব খুশি হয়েছেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট অনূর্ধ্ব-১৫ ও ১৭ দলে খেলেছি। কিন্তু ইনজুরি ও বাজে পারফরম্যান্সের কারণে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ডাক পাইনি। এরপর নিজের ক্যারিয়ারের কথা ভেবে ২০১৮ সালের শেষের দিকে পড়াশোনার জন্য পর্তুগালে চলে আসি। সেখানে বন্ধুদের মাধ্যমে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবে যুক্ত হই। এরপর দুই বছর ক্রিকেটে মনোনিবেশ করি। এরই ফলস্বরূপ পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়েছি।

ক্রিকেটের হাতেখড়ি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, হবিগঞ্জ জেলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ইব্রাহিম খলিল সোহেল ভাইয়ের মাধ্যমে শাপলা সংসদে যুক্ত হই। পরে হবিগঞ্জ জেলা ও সিলেট বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৫ দলে সাফল্য পাই। এ কারণে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫ দল ও পরে অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলার সুযোগ হয়। কিন্তু এরপর বাংলাদেশের ক্রিকেটে আর এগুতে পারিনি। যে কারণে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন হতাশ ছিলাম। কিন্তু এখন পর্তুগাল দলে সুযোগ পাওয়ায় আবারও নিজেকে মেলে ধরার একটা সুযোগ পেয়েছি।

হবিগঞ্জ জেলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক পেসার ইব্রাহিম খলিল সোহেল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, রুপু বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন অন্যতম অলরাউন্ডার হিসেবে স্থান করে নেবে এ প্রত্যাশায় ছিলাম। নানা কারণে তা আর সেটি হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এখন পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ করে নিয়ে নিজের অদম্য ইচ্ছা ও পরিশ্রমের প্রমাণ দিয়েছে। সে এখন ইউরোপের ক্রিকেটে সৌরভ ছড়িয়ে বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি করবে, এটিই প্রত্যাশা করি। রুপু একদিন অনেক বড় ক্রিকেটার হবে।

হবিগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান বলেন, আমি যখন অনূর্ধ্ব-১৪ জেলা দলের দায়িত্বে ছিলাম তখন রুপু আমার নজরে আসে। অনুশীলনে ভালো করায় তাকে আমি সহঅধিনায়ক বানাই। রুপুর যোগ্যতা ছিল বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার। তার নিজের কিছু অবহেলার পাশাপাশি তখনকার বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের নির্বাচকদের তৎপরতার অভাবে সে একটি পর্যায়ে আটকে যায়। আমি আশাবাদী রুপু পর্তুগালের পক্ষে ভালো নৈপুণ্য প্রদর্শন করবে।

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসইআর/এমএমআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।