জুজুৎসু

ঘরোয়া কার্যক্রমে নজর না থাকলেও থেমে নেই বিদেশ সফর

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:৩৭ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আওয়ামী লীগ শাসন আমলে রাজনৈতিক তদবিরে গড়ে ওঠা ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের একটি বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশন। মাঠের খেলায় এই অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম তেমন চোখে না পড়লেও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে আলোচনায় এসেছেন অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। একজন নারী ক্রীড়াবিদকে ধর্ষণের অভিযোগে এই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম নিউটনকে এক সহযোগীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করেছিল গত বছর ১৮ মে।

দেশের ৫৫ ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের তালিকায় ৫৩ নম্বরে থাকা জুজুৎসু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিয়মনীতিও সঠিকভাবে পালন করে না। চলমান তারুণ্যের উৎসবে শুরুর দিকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা না মানলে শাস্তির মুখোমুখিও হয়েছিল। পরে তারুণ্যের উৎসব পালনের জন্য একটা পরিকল্পনা জমা দিয়ে সাময়িকভাবে শাস্তিমুক্ত হয় অ্যাসোসিয়েশনটি। তবে তারা এই উৎসব কর্মসূচিতে কোনো খেলাধুলাই আয়োজন করেনি।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে বাৎসরিক হিসাব জমা দেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা আছে, সেই নির্দেশনা পালন না করে শাস্তির মুখে জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশন। অডিট রিপোর্ট জমা না দেওয়ায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অন্য ২৫টির মতো এই অ্যাসোসিয়েশনের অনুকূলে দেওয়া বরাদ্দ ছাড় দেওয়াও স্থগিত করেছে।

ঘরোয়া খেলাধুলা ঠিকঠাক মতো নাই করুক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে নিয়মিত বাৎসরিক হিসাব জমা না দিক, বিদেশ সফর থেমে নেই জুজুৎসু দলের। সর্বশেষ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশন সফর করেছে থাইল্যান্ড। ১২ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ব্যাংককে হয়েছে এশিয়ান যুব জুজুৎসু প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে ১২ সদস্যের জুজুৎসু দল। প্রতিযোগিতা শেষে সোমবার দলটি দেশে ফিরেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।

রফিকুল ইসলাম নিউটন জেলে যাওয়ার পর গত বছর ৬ জুন থেকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন এই সাইফুল। তবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অনুমোদন দেয়নি। ‘আগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার হওয়ার পর তৎকালীন সভাপতি সভা করে আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। এর পর আমরা কমিটির লোকজন কিছু পরিবর্তন করে নতুন একটি কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে দিয়েছি। এখনো আমরা অফিসিয়ালি কিছু পাইনি’-বলেছেন সাইফুল ইসলাম।

‘জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশন বিদেশে গিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এতটাই ব্যস্ত থাকে যে, ঘরোয়া খেলাধুলা আয়োজনের সময়-সুযোগই পায় না। ২০২৩ সালের পর ঘরোয়া কোনো কার্যক্রম করেনি এই অ্যাসোসিয়েশন।’

নিকট অতীতে জুজুৎসু দল মনে হয় বেশ কয়েকটি দেশ সফর করেছে, তাই না? সাইফুল ইসলামের জবাব, ‘হ্যাঁ। গত বছর মে মাসে আমরা আবুধাবিতে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে দল পাঠিয়েছিলাম। অক্টোবরে গ্রিসে গিয়েছিল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে। ২০২৩ সালে ফ্রান্সেও দল পাঠানো হয়েছিল। আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামগুলো আমরা ঠিকঠাকমতোই করি।’

ঘরোয়া আয়োজনে মনোযোগ কম কেন আপনাদের? সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নানা কারণে আমরা স্থানীয় কার্যক্রমগুলো করতে পারিনি। গত অক্টোবরে গ্রিসে দল পাঠানো নিয়ে ও এ মাসে থাইল্যান্ড সফর নিয়ে ব্যস্ততার কারণে ঘরোয়া খেলা করতে পারিনি। আবার ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে আমি একটু অনুপস্থিতও ছিলাম।’

আপনি দায়িত্বে আছেন ৮ মাস হলো। এই সময়েও তো কিছু হলো না। সরকার নির্দেশিত তারুণ্য উৎসব করেছেন? সাইফুল ইসলাম বললেন, ‘এই জায়গায় আমরা একটু পিছিয়ে আছি। তারুণ্য উৎসবে কর্মসূচি করবো বলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে একটা লিখিত দিয়েছিলাম। করতে পারিনি।’

থাইল্যান্ডে কতজন খেলোয়াড় গিয়েছিলেন, ফলাফলইবা কী? ‘আমরা ১২ জনের দল গিয়েছিলাম। ৫ জন খেলোয়াড়। এর মধ্যে চারজন পদক পেয়েছেন, একটি রৌপ্য ও ৩টি ব্রোঞ্জ। ৬ জন খেলোয়াড়ের জিও (সরকারি আদেশ) নেওয়া হয়েছিল। একজন খেলোয়াড় ও একজন কোচ যাননি।’

আরআই/এমএমআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।