নিখুঁতভাবে শিক্ষার পরিসংখ্যান উপস্থাপনের নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীর
নিখুঁতভাবে শিক্ষার পরিসংখ্যান উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর পলাশীতে শিক্ষা পরিসংখ্যান ব্যুারোতে (ব্যানবেইস) ‘বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০১৫’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ নির্দেশ দেন তিনি।
ব্যানবেইস প্রকাশিত ১১টি সূচক পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের এই ছয় বছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির সুবিধা। আর চার বছরে স্কুলগুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও তিন বছরে বেড়েছে সোলার সিস্টেম ব্যবস্থাপনা।
২০১০ সালে মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ছিল ১: ৩৪ জন, ২০১১ সালে ১: ৩০ জন, ২০১২ সালে ১: ৩৬ জন, ২০১৩ সালে ১: ৩৭ জন, ২০১৪ সালে ১: ৩৯ জন এবং ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১: ৪১ জন। অর্থাৎ শিক্ষার্থীর তুলনায় কমেছে শিক্ষক সংখ্যা। ছয় বছরে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা না বাড়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত শিক্ষকের সংখ্যাও তেমন বাড়েনি।
২০১০ সালে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ৮৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ২০১১ সালে ৭৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ, ২০১২ সালে ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১৩ সালে ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৬২ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে তা হয়েছে ৬৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ। অর্থাৎ প্রশিক্ষিত শিক্ষকের সংখ্যায় বড় ইতিবাচক পরিবর্তন আসেনি।
তবে স্কুলগুলোতে বেড়েছে টয়লেটের সংখ্যা। ২০১০ সালে যা ছিল ৯৪ দশমিক ৯২ শতাংশ, ২০১৫ সালে হয়েছে ৯৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২০১০ সালে কম্পিউটার সুবিধা ছিল ৫৯ দশমিক ২১ শতাংশ, ২০১৫ সালে হয়েছে ৮২ দশমিক ২১ শতাংশ।
২০১০ সালে ইন্টারনেট সংযোগ ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ থাকলেও ২০১৫ সালে বেড়ে হয়েছে ৭২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। বিদ্যুৎ সুবিধা ২০১০ সালে ছিল ৭১ দশমিক ৭১ শতাংশ মাধ্যমিক স্কুলে, ২০১৫ সালে তা হয়েছে ৮৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ২০১০ সালে সুপেয় পানির ব্যবস্থা ৮৫ শতাংশ থাকলেও ২০১৫ সালে হয়েছে ৯৬ দশমিক ৫১ শতাংশ।
ব্যানবেইসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ২০১২ সালে ছিল ১০ দশমিক ১০ শতাংশ, সর্বশেষ তথ্যে এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭১ দশমিক ৯০ শতাংশ। এছাড়া, স্কুলগুলোতে সোলার সিস্টেম ২০১৩ সালে ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ থেকে ২০১৫ সালে বেড়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হারে ইতিবাচক পরিবর্ত এসেছে। গত আট বছরে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমেছে ২১ দশমিক ০৯ শতাংশ। এর মধ্যে ছাত্র ২২ দশমিক ৮৯ এবং ছাত্রীর হার ১৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২০০৮ সালে ঝরে পড়ার হার ছিল ৬১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ২০১৫ সালে ৪০ দশমিক ২৯ শতাংশ। বর্তমানে মাধ্যমিকে ঝরে পড়ার হার ৪০ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলে ৩৩ দশমিক ৭২ এবং ছাত্রী ৪৫ দশমিক ৯২ শতাংশ।
২০১৩ সাল থেকে অনলাইনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়ে সংগৃহীত তথ্যের যথাযথ নিশ্চিত করতে ২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে ফের তথ্য সংগ্রহ করা হয় বলে জানান ব্যানবেইসের প্রধান পরিসংখ্যানবিদ। শিক্ষার্থীর ঝরে পড়াকে ‘অপচয়’ উলেখ করলেও তিনি জানান, কয়েক বছরে ভর্তির হার ভালো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন, ব্যানবেইসের পরিচালক ফসিহউল্লাহ প্রমুখ।
এনএম/এসকেডি/আরআইপি