ভারতে চালু হয়েছে করোনা ট্র্যাকিং ও রেজিস্ট্রেশন অ্যাপ
করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক বিশ্বব্যাপী ধীরে ধীরে কমছে। ভ্যাকসিনের কারণে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। ভারতের নানা প্রান্তে ভ্যাকসিনেশন শুরু হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য কর্মী ও সামনের সারির করোনা যোদ্ধাদের ভ্যাকসিনের ২,৮৪,২৯৭টি ডোজ দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশে মোট ভ্যাকসিনেশনের সংখ্যা ১.৩৭ কোটিরও বেশি। আর এই সব কিছুর পাশাপাশি একটি অ্যাপও ডেভেলপ করা হয়েছে। যার নাম CO-WIN।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের বাজারে ১ মার্চ অর্থাৎ আজ থেকে লঞ্চ করছে COVID-19 ভ্যাকসিন ট্র্যাকিং ও রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত এই CO-WIN অ্যাপ। এক্ষেত্রে দেশের টিকাকরণের প্রক্রিয়ার গতিবিধি ও এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দেখা যাবে CO-WIN অ্যাপে। এর মাধ্যমে করোনা ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেটও পাওয়া যাবে।
করোনা ভ্যাকসিনের জন্য কীভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে? এই বিষয়ে Co-Win প্যানেলের চেয়ারম্যান আর এস শর্মা জানান, ভ্যাকসিনের জন্য ১ বা ২ মার্চ থেকে অ্যাপের মাধ্যমেই রেজিস্টার করা যাবে। তবে অ্যাপ নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ তথা প্রশাসনিক দফতরের লোকজনের ব্যবহারের জন্য।
এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে Aarogya Setu বা Co-WIN অ্যাপের পোর্টালের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য Co-WIN ওয়েবসাইট হল cowin.gov.in। সংশ্লিষ্ট পোর্টাল খোলার পর যাবতীয় স্টেপ দেওয়া থাকবে। সেই অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যা থেকে সহজেই একজন নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারেন।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য কী প্রয়োজন? মোবাইল নম্বরের মাধ্যমেই Co-WIN অ্যাপে রেজিস্টার করতে হবে। এক্ষেত্রে OTP জেনারেট হবে। OTP এন্টার করার পর রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে। এরপর ব্যবহারকারীদের নাম, বয়স, লিঙ্গ ও নানা পরিচয় পত্র দিতে হবে। ভ্যাকসিনেশন সেন্টারেও প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে হবে। অ্যাপে একসঙ্গে পরিবারের চার সদস্যের নাম রেজিস্টার করা যেতে পারে। Aarogya Setu পোর্টাল ও অ্যাপেও এই একই সুবিধা মিলবে।
প্রসঙ্গত, পোর্টাল ও অ্যাপ দু'টিতেই ইতিমধ্যে নানা সমস্যা দেখা গিয়েছে। ব্যবহারকারীদের একাংশের দাবি, OTP জেনারেট হচ্ছে না। কেউ আবার নানা অপশনে ঢুকতে পারছে না। একের পর এক ট্যুইটে স্ক্রিনশট আর লম্বা অভিযোগের তালিকাও দেখা গিয়েছে।
কী এই Co-WIN প্ল্যাটফর্ম? এই Co-WIN অ্যাপ ও প্ল্যাটফর্মে মোট পাঁচটি মডিউল থাকবে। এগুলো হলো অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মডিউল, রেজিস্ট্রেশন মডিউল, ভ্যাকসিনেশন মডিউল, বেনিফিসিয়ারি অ্যাকনলেজমেন্ট মডিউল ও রিপোর্ট মডিউল।
ভ্যাকসিনেশনের স্টক, স্টোরেজ টেম্পারেচার থেকে শুরু করে সমস্ত বিষয় ট্র্যাক করতে পারবে এই প্ল্যাটফর্ম। ভ্যাকসিনেশন সেশনের সময়ও ব্যবহার করা যাবে এই অ্যাপ। এক্ষেত্রে ভ্যাকসিনেশন সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে চালু থাকবে একটি লাইভ হেল্পলাইন নম্বরও। করোনা যুদ্ধে যারা সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মী নন, তারাও এই প্ল্যাটফর্মের রেজিস্ট্রেশন মডিউলের সাহায্যে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করাতে পারবেন। ভ্যাকসিন নেওয়ার দিন ও কেন্দ্র ঠিক করতে পারবেন। তবে, কোন ধরনের ভ্যাকসিন নেয়া যাবে, তা নির্বাচন করতে পারবেন না মানুষজন।
এক্ষেত্রে Co-Win অ্যাপের ভ্যাকসিনেশন মডিউল উপভোক্তার যাবতীয় তথ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং ভ্যাকসিন স্টেটাস আপডেট করার কাজ করবে। এবার সংশ্লিষ্ট উপভোক্তা অর্থাৎ ভ্যাকসিন গ্রাহকের মোবাইলে একটি SMS পাঠাবে Co-Win অ্যাপের বেনিফিসিয়ারি অ্যাকনলেজমেন্ট মডিউল। এই মডিউলের মাধ্যমেই পাওয়া যাবে একটি QR কোড ভিত্তিক সার্টিফিকেট। অন্য দিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপডেট হতে থাকবে Co-WIN রিপোর্ট মডিউল। ভ্যাকসিনেশনের সেশন, কতজন ভ্যাকসিন পেয়েছেন, কতজন এখনো ভ্যাকসিন পাননি, সমস্ত কিছুর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
এমএমএফ/এমএস