নিষিদ্ধ স্থান ‘এরিয়া ৫১’তে লুকিয়ে আছে যে রহস্য

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:০২ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় স্থানগুলোর তালিকায় আছে এরিয়া ৫১ নামক এক জায়গা। জনসাধারণের জন্য নিষিদ্ধ এই স্থানে লুকিয়ে আছে নানা রহস্য। তবে আজও তা ভেদ করতে পারেননি কোনো বিজ্ঞানী কিংবা গবেষকরা।

আমেরিকার নেভাডা স্টেটের দক্ষিণে, লাস ভেগাস থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পাহাড়ঘেরা মরুভূমির মধ্যে আছে নেভাদা টেস্ট অ্যান্ড ট্রেনিং রেঞ্জ। আধুনিক মারণাস্ত্রের সবচেয়ে বড় পরীক্ষাগার। ২৯ লাখ একর জুড়ে থাকা এই রেঞ্জে আমেরিকা নাকি ৫০০টিরও বেশি পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

আর এই নেভাদা টেস্ট অ্যান্ড ট্রেনিং রেঞ্জের ভেতরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন ও সবচেয়ে রহস্যময় এলাকা এরিয়া ৫১। আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে বলে আসছে, এরিয়া ৫১ হলো আমেরিকার সবচেয়ে সুরক্ষিত সামরিক বিমান ঘাঁটি।

তবে সত্যিই কি এরিয়া-৫১ একটি বিমানঘাঁটি নাকি সেখালে লুকিয়ে আছে অন্য কোনো রহস্য? আসলে স্থানটি ঘিরে মার্কিন সেনার অস্বাভাবিক মাত্রার সুরক্ষা ব্যবস্থা পৃথিবী জুড়ে সন্দেহ ও কল্পনার জন্ম দিচ্ছে।

আমেরিকার ভূখণ্ডে থাকা সবচেয়ে সুরক্ষিত কিছু জায়গা যেমন- পেন্টাগন, হোয়াইট হাউস, নাসার সদর দপ্তর ও বিভিন্ন লঞ্চ প্যাডেও অনুমতি নিয়ে সাধারণ মানুষ ঢুকতে পারেন। তবে এরিয়া ৫১ এর আশপাশে মিডিয়া বা জনসাধারণের প্রবেশাধিকার একেবারেই নিষিদ্ধ।

এই স্থানের চারপাশে কোনো প্রাচীর দেওয়া না থাকলেও পরিবেশের সঙ্গে গিরগিটির মতো মিশে আছেন হাজার হাজার সেনারা। খালি চোখে তাদেরকে দেখা যায় না। নিষেধ সত্ত্বেও যদি কেউ এরিয়া ৫১ তে প্রবেশের চেষ্টা করে তাহলে সেনারা অতর্কিত গুলি করে মেরে ফেলে। সেই অনুমতিও দেওয়া আছে তাদের।

এরিয়া ৫১ এর চারপাশে একটি নোটিশ লাগানো আছে, যেখানে লেখা- ‘ইউজ অব ডেডলি ফোর্স অথোরাইজড’। সেনারা ছাড়াও সবার অলক্ষ্যে সেখানে হাজার হাজার মোবাইল সিসি ক্যামেরা, মোশন ডিটেকটর, লেসার ডিটেকটর, সাউন্ড ডিটেকটর, গন্ধ শোঁকার ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোনও স্থানটির সুরক্ষায় আছে।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এরিয়া ৫১ নামক স্থানের উপর দিয়ে কোনো বিমান ওড়ারও অনুমতি নেই। এই স্থানের উপরের আকাশেও কড়া নজরদারি চালানো হয়, এজন্য ১৫৫ মাইল উত্তরে ৯ হাজার ৪০০ ফুট উঁচু বেলডে পাহাড়ের চূড়ায় বসানো আছে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী এয়ার রুট সার্ভেল্যান্স রাডার।

এরিয়া ৫১ কি সত্যিই সেনাবাহিনীর বিমান ঘাঁটি নাকি অন্য কিছু, সেই রহস্য আজও উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেকেরই ধারণা, ওই স্থানে ভিনগ্রহের প্রাণীরা থাকে ও আসা-যাওয়া করে!

এই স্থানের পাশেই আছে দ্য এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল হাইওয়ে। সেখান থেকে নাকি দেখা যায়, অদ্ভুত সব আকাশযান এরিয়া ৫১ নামক স্থানে ওঠানামা করে। পৃথিবীর কোনো বিমানের সাথে সেগুলোর নাকি কোনো মিল নেই।

বিজ্ঞানী বব লেজার জানিয়েছিলেন, এরিয়া ৫১ ঘাঁটিতে এমন কিছু মৌলিক পদার্থ নিয়ে গবেষণা করা হয় যা আবিষ্কারের কথা আমেরিকা বিশ্বকে জানায়নি। তার মতে, সুপারনোভা বা বাইনারি স্টার সিস্টেম থেকে আমেরিকা সম্ভবত এমন একটি মৌলিক পদার্থ সংগ্রহ করতে পেরেছে।

যে পদার্থটির মাত্র এক কেজি দিয়ে ১০ মেগাটনের ৪৭টি হাইড্রোজেন বোমা বানানো যাবে। এমন নানা তত্ত্বের প্রচলন আছে নিষিদ্ধ স্থান এরিয়া ৫১ নিয়ে। তবে ওই স্থানের আসল রহস্য এখনো সবারই অজানা।

সূত্র: ডেইলি হান্ট

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।