লালবাগ কেল্লায় পরীবিবিকে নিয়ে প্রচলিত যত কল্পকথা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪৭ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০২২

পুরান ঢাকার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন লালবাগ কেল্লা। এই কেল্লাকে ঘিরে আছে নানা কল্পকথা। লালবাগ দুর্গের ভেতরে রয়েছে পরীবিবির সমাধিস্থল।

লোকমুখে এই পরীবিবিকে নিয়ে অনেক গল্প শোনা যায়। পরীবিবির আসল নাম ইরান দুখত রাহমত বানু। তবে পরীবিবি নামটিই অধিক প্রচলিত।

পরীবিবি ছিলেন বাংলার মুঘল সুবেদার শায়েস্তা খানের কন্যা। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র আজম শাহ্ নির্মাণ করেন লালবাগ দুর্গ।

শায়েস্তা খান তখন ছিলেন পূর্ব বাংলার সেনাপতি। আওরঙ্গজেবের মামা ছিলেন শায়েস্তা খান।

পরীবিবিকে নিয়ে প্রচলিত গল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শোনা যায়, পরীবিবিকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন শাহজাদা আজম শাহ্।

প্রথমদিকে এই বিয়েতে রাজি ছিলেন পরীবিবি। তবে পরীবিবির মা মারা যাওয়ার পর ভেঙে পড়েন তিনি।

একপর্যায়ে বিয়েতে অস্বীকৃতি জানান তিনি ও শাহজাদা আজমকে শর্ত দেন, তিনি যদি তার পিতা শায়েস্তা খানের জন্য উপযুক্ত পাত্রী নির্বাচন করে বিবাহ দিতে পারেন তাহলে তিনি শাহজাদা আজমকে বিয়ে করবেন।

অনেক চেষ্টার পরেও ব্যর্থ হন শাহজাদা আজম। এরপর তিনি সায়েস্তা খানের কাছে বাংলা সোপর্দ করে চলে যান দিল্লি। এই গল্পের সঙ্গে অনেকে দ্বিমত পোষণ করেন।

তারা বলেন, সম্রাট আজম শাহের সঙ্গে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেনমোহরে পরীবিবির বিয়ে ঠিক হয় ১৬৬৮ সালে। বিয়ের ১৬ বছর পর অর্থাৎ ১৬৮৪ সালে পরলোক গমন করেন তিনি।

পরীবিবির মৃত্যুর পর দুর্গের অভ্যন্তরে মসজিদ ও দরবার হলের মাঝখানে শায়িত করা হয় তাকে। স্থানটিকে পরীবিবির সমাধিস্থল বলা হয়।

পরীবিবির বিয়ে নিয়ে ইতিহাসবিদদের মাঝে মতভেদ আছে। অনেকেই বলেন, পরীবিবির সঙ্গে শাহজাদা আজমের বিয়ে হয়েছিল।

আবার অনেকেই বলেন, পরীবিবি শাহজাদা আজমের বাগদত্তা ছিলেন। বিয়ের আগেই তিনি মারা যান।

এদিকে আজম শাহ্ খুব অল্প সময়ের জন্য ছিলেন ঢাকায়। ধারণা করা হয়, এক বছরের মতো সময় ঢাকায় অবস্থান করেন আজম শাহ্। ধরেই নিলাম আজম শাহ্ এর সঙ্গে পরীবিবির বিয়ে হয়েছিল।

তাহলে সেটা কীভাবে সম্ভব?

সম্পর্কের দিক বিবেচনা করলে পরীবিবি ছিলেন আজম শাহ্ এর ফুফু। যেহেতু ইতিহাসে উল্লেখ আছে শায়েস্তা খান আওরঙ্গজেবের মামা।

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, মুঘল আমলে বিয়ে হতো বংশ দেখে। তাহলে এমন সম্পর্কে কীভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়?

আর নববিবাহিতা স্ত্রীকে রেখেই বা শাহজাদা আজম কেন চলে যাবেন? আর শাহজাদা আজম সম্রাটের অনুমতি ব্যতীত কীভাবে বিয়ে করতে পারেন?

শাহজাদা আজম পরীবিবিকে বিয়ে করেছেন এমন কোনো শক্ত প্রমাণ ইতিহাসে নেই।

লেখক: ফ্রিল্যান্সার গণমাধ্যমকর্মী

জেএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।