সঙ্গীকে নিয়ে ঘুরে আসুন ভারতের ‘ছোট্ট স্কটল্যান্ডে’

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, ০৬ মে ২০২৩

স্কটল্যান্ড ভ্রমণের স্বপ্ন কমবেশি সবাই দেখেন! তবে অর্থ ও সময় মেলানো কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। আপনি যদি এ মুহূর্তে স্কটল্যান্ড ভ্রমণে যেতে না পারেন, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন ভারতের ছোট্ট স্কটল্যান্ডে। হ্যাঁ, ভারতেও একটি স্কটল্যান্ড আছে। যাকে ‘উটি’ নামে চেনেন সবাই।

এটি ভারতের সবচেয়ে সুন্দর হিল স্টেশন, যা চা বাগানের জন্য বিখ্যাত। সেখানকার নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও দর্শনীয় সব দম্পতিদের মুগ্ধ করে। আর এজন্যই বেশিরভাগ দম্পতি হানিমুনের জন্য বেছে নেন উটি।

আরও পড়ুন: গরমে স্বস্তি পেতে ঘুরে আসুন মানালির ৫ ‘অফবিট প্লেসে’

এই হিল স্টেশনটি এতোটাই সুন্দর যে একবার গেলে আর ফিরে আসতে ইচ্ছে হবে না। বেশিরভাগ পর্যটকই জানান, উটি গিয়ে মেলে স্কটল্যান্ডের মতো অনুভূতি। তাই আপনি যদি উটি যাওয়ার প্ল্যান করেন, তাহলে জেনে নিন সেখানে গিয়ে কোন কোন স্থানে ঘুরবেন-

অ্যাভালাঞ্চ লেক

উটির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাভালাঞ্চ লেক। উটি থেকে ২৮ কিলোমি দূরে অবস্থিত স্থানটির পাহাড়, সবুজ অরণ্য ও প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।

এছাড়া স্থানটি ট্রাউট মাছ ধরার জন্যও বিখ্যাত। এখানে আপনি ক্যাম্পিং, রাফটিং ও ট্রেকিং করতে পারবেন। এটি স্থানীয়দের জন্য একটি ভালো পিকনিক স্পট।

আরও পড়ুন: মালদ্বীপ নাকি আন্দামান, হানিমুনের জন্য সেরা গন্তব্য কোনটি?

উটি লেক

উটি লেক হলো সেখানকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি। এটি একটি কৃত্রিম হ্রদ, যা মাছ ধরার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল। এই হ্রদ নৌকা ভ্রমণের জন্য জনপ্রিয়।

এই লেকের কাছে একটি বোটিং হাউস আছে, যেখান আপনি নৌকা ভাড়া করতে পারবেন। আপনি যদি আশপাশের দৃশ্য উপভোগ করতে চান, তাহলে লেকের ধারে সাইকেল চালাতেও পারেন।

এছাড়া হরিণ পার্ক পরিদর্শন করুন

ডিয়ার পার্ক উটি লেক থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি উটির এমন একটি জায়গা, যা হরিণের আবাসভূমি। সাম্বার ও চিতলের মতো প্রজাতির হরিণ’সহ, হরিণ পার্কটি বন্যপ্রাণী প্রেমীদের জন্য একটি দুর্দান্ত স্থান।

আরও পড়ুন: প্রথমবার ত্রিপুরা গেলে যে ৬ স্থান ঘুরতে ভুলবেন না

২২ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত পার্কটি ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি শুধু তামিলনাড়ু নয়, ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। খুব কাছ থেকে সেখানে আপনি খরগোশ’সহ অনেক প্রাণী দেখতে পাবেন।

কালহাট্টি জলপ্রপাত

যেহেতু উটি একটি হিল স্টেশন, তাই এর আশপাশে আপনি অনেক জলপ্রপাতও পাবেন। এর মধ্যে কালহাট্টি হলো সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত। উটি থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে, উটি-মহীশূর সড়কে এর অবস্থান।

কালাহাট্টি গ্রাম থেকে ২ মাইল গেলেই আপনি পৌঁছাবেন জলপ্রপাতে। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে অবশ্যই মুগ্ধ করবে।

আরও পড়ুন: উত্তর-পূর্ব ভারতে ঘুরে দেখুন জনপ্রিয় ৮ স্পট

মুদুমালাই জাতীয় উদ্যান

উটি থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মুদুমালাই জাতীয় উদ্যান প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে স্বর্গের চেয়ে কম নয়। এখানে আপনি গাছপালাসহ অনেক বন্যপ্রাণী দেখতে পাবেন।

পার্কটি প্রায় ৫০টি বাঘের আবাসস্থল, তাই এটিকে টাইগার রিজার্ভ হিসাবেও ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে আপনি বন বিভাগের গেস্ট হাউসেও থাকতে পারেন।

রোজ গার্ডেন ঘুরে আসুন

৪ হেক্টর জুড়ে বিস্তৃত উটির রোজ গার্ডেন দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে সেরা। এই বাগানে আপনি ২০ হাজারেরও বেশি গোলাপ পাবেন। বাগানটি এলকে পাহাড়ের একটি ঢালে তৈরি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: যে গ্রামের নারীরা ৭০ বছরেও দেখতে ‘তরুণীর’ মতো

এ কারণে যেখান থেকে পর্যটকরা চারপাশের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পারেন। জনাকীর্ণ শহরের জীবন থেকে দূরে সেখানে গিয়ে আপনি তাজা বাতাসে শ্বাস নিতে পারেন।

উটিতে কীভাবে যাবেন?

আকাশপথে

উটির নিকটতম বিমানবন্দর হলো ‘কোয়েম্বাটোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’। উটি থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টার পথ।

কোয়েম্বাটুর বিমানবন্দর এয়ার অ্যারাবিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, জেট কানেক্ট ও স্পাইস জেটের মাধ্যমে দিল্লি, কোঝিকোড, মুম্বাই, আহমেদাবাদ, ব্যাঙ্গালোর, চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদের মতো শহরগুলোর সঙ্গে ভালোভাবে সংযুক্ত।

আরও পড়ুন: কলকাতার যেসব স্থানে ঢুঁ মারতে ভুলবেন না

রেলপথে

উটির নিজস্ব রেলওয়ে স্টেশন আছে। যার নাম উটি রেলওয়ে স্টেশন। এটি তামিলনাড়ুর প্রধান শহরগুলোর সঙ্গে ভালোভাবে সংযুক্ত। এটি প্রধান নতুন দিল্লি-কোয়েম্বাটোর রেললাইনের উপর অবস্থিত।

রেলপথটি নতুন দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরু, কোয়েম্বাটোর, চেন্নাই, কোচি, মহীশূর, লক্ষ্ণৌ, চেন্নাই, কন্যাকুমারী, পুরী, আহমেদাবাদ ও জয়পুরের মতো শহরগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত।

সূত্র: প্রেসওয়্যার ১৮

জেএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।