পুরস্কার পেল ৩ হাজার ৪২১ জন শিক্ষার্থী


প্রকাশিত: ০৯:২৯ এএম, ১১ মার্চ ২০১৬

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র পরিচালিত ২০১৫ শিক্ষাবর্ষে বই পড়া কর্মসূচিতে উৎকর্ষতার পরিচয় দেয়ার জন্য খুলনায় ৩ হাজার ৪২১ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দিয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও গ্রামীণফোন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় নগরীর সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মাঠে এ পুরস্কার বিতরণী উৎসবের আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথি ছিলেন বিকল্পধারা চলচ্চিত্রের পথ প্রদর্শক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহবুব জামিল ও বিশেষ অতিথি খুলনা বিভাগের মাননীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের দেশভিত্তিক উৎকর্ষ কার্যক্রমের আওতায় ২০১৫ সালে খুলনা মহানগরীর ৪৫ টি স্কুলের প্রায় ৬৫০০ শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্যে মূল্যায়ন পর্বে যারা কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে তাদের পুরস্কার প্রদানের জন্য গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় এই পুরস্কার বিতরণী উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই উৎসবের প্রথম পর্বে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক টি এম জাকির হোসেন, খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লায়লা আরজুমান, দুইবারের এভারেস্ট বিজয়ী এম এ মুহিত, গ্রামীণফোনের খুলনা অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার ইকবাল মাহমুদ ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শরিফ মো. মাসুদ।  দ্বিতীয় পর্বেও উল্লিখিত অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন।

পুরস্কার বিতরণী উৎসবের প্রথম পর্বের প্রধান অতিথি জনাব মাহবুব জামিল ছাত্রছাত্রীদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি বলেন,‘সবাই মিলে কাজ করলে আমরা বাংলাদেশকসর্বোচ্চ স্থানে নিয়ে যেতে পারবো। এজন্য আমাদের আলোকিত মানুষ হতে হবে। আলোকিত মানুষ হওয়ার জন্য আমাদের পড়তে হবে, জানতে হবে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, জানার কোনো শেষ নেই, তাই পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি আরও বই পড়তে হবে। এতে করে তোমাদের মধ্যে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটবে। তোমরা আলোকিত হলেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের আলোকিত মানুষ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।

বিশেষ অতিথি খুলনা বিভাগের মাননীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, চেষ্টা ও অধ্যাবসার মাধ্যমে যে কোনো লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন বই পড়া। বই পড়ার মাধ্যমে তোমরা নিজেরা আলোকিত হয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে সর্বোচ্চ আসনে পৌঁছে দিবে। তোমরা আলোকিত হলেই বাংলাদেশ আলোকিত হবে, বাংলাদেশ আলোকিত হলে আগামী দিন সুন্দর ও আনন্দময় হবে।

পর্বতারোহী এমএ মুহিত উপস্থিত শিক্ষার্থীদের এভারেস্ট বিজয়ের গল্প বলে তাদের উদ্বুদ্ধ করেন। পাশাপাশি বই পড়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমি এভারেস্ট জয় করেছি, তোমরাও প্রত্যেকেই এভারেস্ট জয় করতে পারবে। প্রত্যেকের স্বপ্নই হলো এক একটি এভারেস্ট, তোমাদের স্বপ্নই হল তোমাদের এভারেস্ট। সেই স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে তোমরা এভারেস্ট জয় করতে পারবে।

Khulna

তিনি আরও বলেন, সাহসী মানুষের কাজ হচ্ছে র্দুনীতি না করা, নারী নির্যাতন না করা, ইভটিজিং না করা ও ধুমপান না করা যারা এইসব করে, তারা কাপুরুষ। কাপুরুষরা কখনও দেশপ্রেমিক হতে পারে না। বড় মানুষ হতে পারে না। দেশপ্রেমিক ও বড় মানুষ হতে হলে বেশি বেশি বই পড়তে হবে।

গ্রামীণফোনের খুলনা অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার জনাব ইকবাল মাহমুদ বলেন, গ্রামীণফোন এ দেশের নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে জ্ঞান বিকাশের অগ্রপথিক বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে কাজ করতে পেরে গ্রামীণফোন গর্বিত। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচির সঙ্গে ২০০৪ সাল থেকে গ্রামীণফোন জড়িত রয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অনলাইন বইপড়া কর্মসূচি `আলোর পাঠশালা`র কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটের সুবিধা অসুবিধার কথা বলে বিপদজনক দিকগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। এজন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে বলেন তিনি।

গ্রামীণফোন এর সহযোগিতায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এই পুরস্কার বিতরণী উৎসবের দুটি পর্বে ৪৫টি স্কুলের ৩ হাজার ৪২১ জন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে প্রথম পর্বে ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৭৬৭ জন শিক্ষার্থী পুরস্কার নিয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে পুরস্কার গ্রহণ করেছে ২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৬৫৪জন শিক্ষার্থী।

আলমগীর হান্নান/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।