পাইলট হওয়ার স্বপ্ন থেকে সহকারী জজ পরীক্ষায় প্রথম

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩

ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল পাইলট হবেন। তবে পরবর্তী সময়ে সে চেষ্টা আর করা হয়নি। পরে বিচারক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। প্রবল আগ্রহ নিয়ে শুরু করেন পড়াশোনা। অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ১৫তম সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছেন আশিক-উজ-জামান।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন (বিজেএসসি) সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

আশিক-উজ-জামান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। বর্তমানে তিনি স্নাতকোত্তর (এলএলএম) অধ্যয়নরত। বাংলাদেশ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা মুহাম্মদ আহসান ও গৃহিণী আলাতুন বেগম দম্পতির সন্তান আশিক। তার বড় বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন।

আরও পড়ুন: সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় এবারও প্রথম রাবি শিক্ষার্থী

আশিকের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বালাবীরে। বাবার চাকরির সুবাদে ছোটবেলায় রংপুরে থাকতেন। সেখানেই রংপুর ক্যাম্প পাবলিক স্কুল থেকে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে পঞ্চম শ্রেণি পাস করেন। এরপর রংপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে মাধ্যমিক (এসএসসি) এবং উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাস করেন। এরপর ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। আইন বিভাগের স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। বর্তমানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত।

আরও পড়ুন: গণপিটুনির পর মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে ‘শীত নিবারণ’

প্রথম স্থান অধিকার করা আশিক-উজ-জামান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার এ সফলতার পেছনে আমার পরিবার ও বিভাগের শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। আমি তাদের গর্বিত করতে পেরেছি। এ জায়গাতেই আমার সন্তুষ্টি।’

ছোটবেলার স্বপ্ন প্রসঙ্গে আশিক বলেন, ‘ছোটবেলায় আমাদের স্বপ্নগুলো থাকে ছন্নছাড়া। আমার স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আর পাইলট হওয়ার চেষ্টা করা হয়নি। এরপর আইন বিভাগে ভর্তি হলাম, তখন স্বপ্ন ছিল জজ হবো। অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।’

আরও পড়ুন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে সাইকেল চুরি

তার এ সফলতায় উচ্ছ্বসিত বিভাগের শিক্ষকরা। আইন বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য সহকারী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগর বলেন, ‘সারাদেশের মধ্যে সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে আমাদের ছাত্র আশিক। সে সবেমাত্র এলএলবি শেষ করেছে। এখন এলএলএম মানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। আমার বিশ্বাস ছিল সে এরকমভাবেই আমাদের গর্বিত করবে।’

পড়াশোনার বিষয়ে জানতে চাইলে আশিক বলেন, ‘এ পরীক্ষায় ভালো করতে হলে ডিপার্টমেন্টের বিষয়গুলোতে ফোকাস দিতে হবে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সমসাময়িক বিষয়ে ধারণা থাকতে হবে। নিজের ওপর আস্থা রাখতে হবে আর অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তবেই সফলতা আসবে।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে রাবির এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে যদি জজ হিসেবে গেজেটেড হই তাহলে মামলার জট কমাতে কাজ করবো। দরিদ্র-অসহায় মানুষ যাতে ন্যায়বিচার পান সে বিষয়ে সহায়তা করবো। সৃষ্টিকর্তা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেটা আসলে অনেক বড় দায়িত্ব। এ দায়িত্বকে আমি যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করবো।’

মনির হোসেন মাহিন/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।