বাড়তি টাকা দিয়েও মিলছে না সয়াবিন তেল
ময়মনসিংহে সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ক্রেতারা দোকানে দোকানে ঘুরেও সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না। ফলে এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন অসাধু বিক্রেতারা। তারা বোতলের গায়ে মূল্যতালিকার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন। এতে ক্ষুব্ধ হলেও উপায় না থাকায় বেশি দামে তেল কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ময়মনসিংহ শহরের মেছুয়া বাজার ও শহরতলীর শম্ভুগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের চেয়ে দোকানিরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। রমজান উপলক্ষে ক্রেতারা অতিরিক্ত পণ্য কিনছেন। বাজারে অন্য পণ্যের সংকট না থাকলেও বোতলজাত সয়াবিন তেল সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক বিক্রেতারা বোতলের গায়ে লেখা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন।
তেল কিনতে আসা আশরাফুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এক দোকানে তেল আছে তো আরেক দোকানে নেই। কয়েকটি দোকান ঘুরে তেল না পেয়ে ১০ টাকা বেশি দিয়ে তেল কিনেছি। আমি মনে করি, সিন্ডিকেট করে বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে।’
নূরুল আমিন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘তেল থাকলেও অনেক দোকানি বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। তারা ক্রেতাদের দেখে তেল লুকিয়ে ফেলছেন। আবার অনেকে আগে থেকেই দোকানে লুকিয়ে রেখেছেন। তারা ভাবছেন, রমজানে তেলের দাম বেড়ে যাবে। তখন বোতলে লেখা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে অতিরিক্ত লাভ করতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি চার দোকান ঘুরে দুই লিটারের একটি বোতল কিনেছি। তবে দোকানি পাঁচ টাকা বেশি নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা গোডাউনে তেল মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে থাকলে প্রশাসনের অভিযানের মাধ্যমে এগুলো বের করা প্রয়োজন।’
দাম বেশি রাখার কারণ জানতে চাইলে মেছুয়া বাজারের ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘তেলের সংকট কাটছে না। ডিলাররা দোকানিদের চাহিদা অনুযায়ী তেল দিতে পারছেন না। ফলে অনেক দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। অনেক বিক্রেতা বেশি দামে বিক্রি করে পকেট ভারী করলেও আমি বোতলের গায়ে লেখা মূল্যের চেয়ে বেশি রাখছি না।’
শম্ভুগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, ‘কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন, তেল উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি। রমজান উপলক্ষে চাহিদা আরও কয়েকগুণ বেড়েছে। সে তুলনায় তেল না থাকায় অনেক বিক্রেতারা ইচ্ছে করেই কিছু বাড়তি দামে তেল বিক্রি করছেন।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ীরা তেল মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পকেট ভারী করতে চেষ্টা করছেন কিনা নিশ্চিত হতে আমাদের তদারকি চলছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর বিসিক শিল্প এলাকায় এনজি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে মজুদ করা বিপুল পরিমাণ তেলে পাওয়া যায়। এসময় মালিককে পাওয়া যায়নি। পরে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে ম্যানেজারকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেয় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজারগুলোতেও অভিযান চলমান রয়েছে। তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করাসহ বেশি দামে বিক্রির প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এমএন/এমএস