জমে উঠেছে দিনাজপুরের বউ বাজার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুর
প্রকাশিত: ০৩:৪১ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৫

দিনাজপুরে রমজানের প্রথম থেকে জমে উঠেছে বউ বাজার। সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত বাজারে নারী ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। বাজারে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল থান কাপড় ও থ্রি-পিসের দোকানে।

সাপ্তাহিক ছুটিরদিনে দোকান-কর্মচারীদের নিজেদের বাড়তি আয়ের জন্য ও নারী ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে বসে বউ বাজার। দোকান-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে শুধুমাত্র নারীদের জন্য প্রতি শুক্রবার বসা এ বাজার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঈদকে সামনে রেখে উপচেপড়া ভিড় ছিল বাজারে।

বিজ্ঞাপন

সকাল ৭টা থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বাসুনিয়াপট্টি, মাহদহপট্রি, চুরিপট্রি ও গরুহাটি এ চারটি রাস্তার দুই ধারে বসে বউ বাজার। এখানকার দোকানের যিনি মালিক তিনি কোনো না কোনো দোকানের কর্মচারী। আর ছুটিরদিনে এসব দোকানের কর্মচারীদের পরিচালিত বাজারে ক্রেতারা স্বল্পমূল্যে তাদের পছন্দনীয় পণ্য পাচ্ছেন। পাশাপাশি দোকান কর্মচারীদেরও হচ্ছে বাড়তি আয়। উন্নতমানের দোকানে যেসব কাপড় পাওয়া যায়, সেই কাপড় এ বাজারে পাওয়া যায় কম দামে। এতে করে বউ বাজারে নারী ক্রেতাদের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

দুপুর পর্যন্ত বউ বাজার খোলা রাখার নিয়ম থাকলেও ঈদের কারণে ছুটির দিনও বিকেল পর্যন্ত বিক্রেতারা তাদের দোকান খোলা রেখেছেন। উন্নতমানের দোকানে যেসব কাপড় পাওয়া যায় ঠিক সেসব কাপড় বউ বাজারেও পাওয়া যায় অনেক কম মূল্যে। কারণ এ কাপড়গুলো যখন উন্নতমানের দোকানে বিক্রি হয় তখন সেগুলোর ওপর দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি যোগ করে এসব কাপড়ের মূল্য বেশি হয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

আর দোকান কর্মচারীরা রাস্তার ওপরে এ দোকান পরিচালনা করার কারণে কোন ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, খাজনা দিতে হয় না। তাই এখানে কম মূল্যে কাপড় বিক্রি করতে পারেন তারা।

সম্পা আক্তার এসেছেন শহরের ছোট গুড়গোলা থেকে। তিনি জানান, এ বাজারে খুবই কম মূল্যে উন্নতমানের সব ধরনের কাপড় পাওয়া যায়। শুধুমাত্র কম রোজগারের ক্রেতারাই নয়, ধনীরাও আসেন কাপড় ক্রয় করার জন্য। এখন এ বাজার নারীদের নিকট জনপ্রিয় একটি বাজারে পরিণত হয়েছে। কারণ এ বাজারে বিক্রেতারা ছেলে মানুষ হলেও ক্রেতা হিসেবে কোনো পুরুষ মানুষ থাকে না। এতে করে মহিলারা স্বাচ্ছন্দ্যে নিজেদের বাজেটের মধ্যে উন্নত মানের কাপড় কিনতে করতে পারেন।

সৌমি আক্তার একজন বিউটিশিয়ান। তিনি বউ বাজারে এসেছিল রমজান উপলক্ষে কাপড় কিনতে। তিনি বউ বাজারে কম দামে অনেক ভাল ভাল কাপড় কিনেছে। তিনি মাঝে মাঝে এ বাজারে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য কাপড় কিনতে আসেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জমে উঠেছে দিনাজপুরের বউ বাজার

বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নাজিম উদ্দিন রুবেল জানান, ১৭ বছর ধরে এ বাজার পরিচালিত হয়ে আসছে। এতে করে ক্রেতারা যেমন সুফল পাচ্ছে তেমনি কর্মচারীরাও লাভবান হতে পারছেন। বাজারে ২২০টি নিয়মিতভাবে দোকান নিয়ে আসেন। তবে ঈদে এ দোকানের সংখ্যা বেড়ে যায়। প্রায় ৩০০ দোকান বসে রমজান মাসের শুক্রবার গুলোতে।

সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার বলেন, বউ মাজারে নিজস্ব নিরাপত্তার জন্য ছয়জন কর্মী রয়েছে। যার মধ্যে দুজন মহিলা। এছাড়ার প্রতিটি মোড়ে রয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। যাতে করে মহিলারা নিরাপদে কেনা কাটা করতে পারেন। এ মার্কেটে শুধু দিনাজপুরের নয় ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার ক্রেতারাও কাপড় কাপড়সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে আসেন।

দোকানদার ইমতিয়াজ মাসুদ করিম বলেন, তিনি একটি দোকানের কর্মচারী। তিনি এখানে বউ বাজারের শুরু থেকে দোকানদারি করছেন। সব সময় বেচা কেনা ভাল। তবে রমজানে বেশি বেচা কেনা হয়। কম দামে অনেক ভাল কাপড় পাওয়ায় মহিলারা এখানে পরিবারে জন্য কাপড় কিনতে আসেন। এখানে শুধু কাপড় নয় জুতা, সেন্ডেলসহ অন্যান্য জিনিসও পাওয়া যায়।

বউ বাজারে সার্বক্ষণিক হ্যান্ড মাইক নিয়ে গ্রাহকদের, পার্স, মানিব্যাগ, মোবাইল ও পকেট খেয়াল রাখার জন্য মাইকিং করেন সালমা খাতুন। তিনি বাঁশি ফুকিয়ে রাস্তার মাঝখানে জটলা বা যানবাহন আটকে গেলে তার নিরাপদে চলাচলের ব্যবস্থা করেন।

বিজ্ঞাপন

এমদাদুল হক মিলন/আরএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।