দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন
ভোট চুরির অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪ সালে ডামি নির্বাচনের আয়োজন এবং ভোট চুরির অভিযোগে টাঙ্গাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকসহ ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় টাঙ্গাইলের পাঁচজন সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) মামলার নথি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এর আগে সোমবার টাঙ্গাইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভূঞাপুর থানার আমলি আদালতে কামরুল হাসান নামে এক ব্যক্তি মামলাটি করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে, ডিবিসির সাংবাদিক সোহেল তালুকদার, দেশ টিভির টাঙ্গাইল প্রতিনিধি অভিজিৎ ঘোষ, ভোরের কাগজের ভুঞাপুর প্রতিনিধি সন্তোষ দত্ত, আনন্দ টিভির প্রতিনিধি আল আমিন শোভন ও দৈনিক যুগান্তরের ভুঞাপুর প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান বাবুল।
আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রুমেলিয়া সিরাজাম মামলাটি আমলে নিয়ে ভূঞাপুর থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার বাদী কামরুল হাসান টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভারই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, মামলায় ১৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের তালিকায় রয়েছেন টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আব্দুল আওয়াল, তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামসহ পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসার, আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, ‘ভারতের নির্দেশক্রমে শেখ হাসিনা অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিগত ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একটি ডামি নির্বাচনের আয়োজন করে। বাদী কামরুল হাসান ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়নের ভারই উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন। তিনি অন্য ভোটারদের সঙ্গে ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালায়। আসামিরা তাকে মারপিট করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। নির্বাচনে পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসারের সহায়তায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে। এভাবে অন্যের ভোট চুরি করে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনিরকে এমপি পদে নির্বাচিত করা হয়। এতে দেশ ও জনগণের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইল বার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু রায়হান খান বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা রুজু করা হয়েছে। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে ভূঞাপুর থানার ওসিকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।
এ ব্যাপারে মামলার আসামি দেশটিভির টাঙ্গাইল প্রতিনিধি অভিজিৎ ঘোষ বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে একাধিক নিউজ হয়েছে। এছাড়াও বিএনপির নেতাদের যোগসাজশে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইন্ধন জুগিয়েছে এ মামলায়। প্রকৃত সাংবাদিকদের দমনের জন্যই এ মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আব্দুল্লাহ আল নোমান/এফএ/জেআইএম