মামলা থেকে বাঁচাতে ছাত্রলীগ নেতাকে বিএনপির প্রত্যয়ন

ঢাকার পল্টন থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি পটুয়াখালীর কলাপাড়া ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদককে সক্রিয় কর্মী হিসেবে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছে বিএনপি। বিজ্ঞপ্তিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ কয়েক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক বলছেন ভুলবশত ছাত্রলীগ নেতার নাম আসায় প্রত্যয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ৫ আগস্টের পর ঢাকার একাধিক থানায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের সঙ্গে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার শতাধিক মানুষকে আসামি করা হয়। আসামি তালিকায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নাম রয়েছে। ওই মামলায় অনেক বিএনপি কর্মীদের নাম থাকায় স্থানীয় বিএনপির নেতারা এটি ঠিক হয়নি বললেও কেউ কেউ এ নিয়ে আদালতে বাদীকে দিয়ে এফিডেফিট কিংবা বিএনপির প্যাডে বিএনপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে সুপারিশ করে মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে চেষ্টা করছেন। এতে অনেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ঢাকা পল্টন এলাকায় হত্যাচেষ্টার ঘটনা দেখিয়ে ৮ মে ২০২৫ পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের মো. বেল্লাল। মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে ১২৩ জন আসামির মধ্যে ১১৯ নম্বরে নাম রয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. গোলাম রাব্বি খানের।
মামলা দায়েরের পর এ থেকে ৮ জনকে অব্যাহতি দিতে ১২ জুন ২০২৫, চম্পাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদক সক্রিয় বিএনপি কর্মী হিসেবে তাদের প্রত্যয়ন করেন। যে তালিকার ৫ নম্বর ক্রমিকে রয়েছেন রাব্বি। তালিকাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী বেলাল হোসেন বলেন, যাদের মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের লোক। বিএনপির কিছু লোক এদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিএনপি বলে চালিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এটা দুঃখজনক।
চম্পাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক মো. মিলন মুন্সী বলেন, আমি ও সভাপতি বিএনপির দুর্দিনের কর্মী। ৫ তারিখের পর নেতা হয়েছি এমন নয়। রাব্বি খানের নাম বিএনপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে সুপারিশ তালিকায় ভুলবশত এসেছে, যা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী হুমায়ুন সিকদার বলেন, ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি খানের নাম যুক্ত সুপারিশ তালিকাটি জালিয়াতি ভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। ইউনিয়ন বিএনপি থেকে কোনো সুপারিশ তালিকা যাবে না, যাবে উপজেলা থেকে।
হাজী হুমায়ুন আরও বলেন, ঢাকার পল্টন থানার ওই মামলায় বিএনপির পদ পদবীধারী ৪ নেতাসহ উপজেলার অনেক নিরীহ মানুষকে শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি করা হয়েছে, যা সঠিক হয়নি। বাদীকে জিজ্ঞেস করেছি, বাদী বলেছে সে এ বিষয়ে জানে না।
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এফএ/জেআইএম