জলাবদ্ধতা-বন্যার আশঙ্কা

নোয়াখালীর ১৮০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৭:০৫ পিএম, ০৯ জুলাই ২০২৫

অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও সম্ভাব্য বন্যার আশঙ্কায় নোয়াখালীতে এক হাজার ৮০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

বুধবার (৯ জুলাই) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসরাত নাসিমা হাবীব জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নোয়াখালীর ১৮০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত

তিনি বলেন, বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ও সম্ভাব্য বন্যার আশঙ্কায় শনিবার (১২ জুলাই) পর্যন্ত জেলার এক হাজার ২৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম (ক্লাস) স্থগিত করা হয়েছে। তবে মালামাল রক্ষণাবেক্ষণে শিক্ষকরা উপস্থিত থাকবেন। পরিস্থিতি বুঝে এটি আরও বাড়ানো হতে পারে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জাগো নিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার জেলার পাঁচ শতাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদাসার চলমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

নোয়াখালীর ১৮০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত

এদিকে গত দুই দিনের টানা বর্ষণে জেলা সদরসহ পাঁচ উপজেলা পানিতে তলিয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরসহ কাঁচা ও আধাপাকা সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও আবার কোমরপানি জমে জনজীবনে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ স্থবিরতা।

নোয়াখালী সদর, সুবর্ণচর, সেনবাগ, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের জরুরিভাবে দুর্যোগ মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। উপকূলে ব্যাপক নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামিম বলেন, মুছাপুর দায়ীয়ের খালে ২ নম্বর স্লুইসগেট সংলগ্ন এলাকায় প্রভাবশালীদের দেওয়া বাঁধে জলাবদ্ধতায় বীজতলা নষ্ট হতে চলেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সেটি অপসারণ করতে বলা হয়েছে।

নোয়াখালীর ১৮০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, জলাবদ্ধতা ও বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি চলছে। পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য মোবাইল প্ল্যান্ট ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রাখা হয়েছে। সাপে কাটা ও ডায়রিয়াসহ জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ত্রাণ তৎপরতা সমন্বয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ ইসমাঈলের সঞ্চালনায় নোয়াখালী পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক জালাল উদ্দীন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখিঁনুর জাহান নিলা, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ইকবাল হোসেন মজনু/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।