উদ্যোক্তা সংকটে ধুঁকছে লালমনিরহাটের বিসিক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৫:০৫ পিএম, ১৯ জুলাই ২০২৫

প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর পার হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি লালমনিরহাটের বিসিক শিল্পনগরী। একসময় সম্ভাবনার স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও আজ তা পরিণত হয়েছে পরিত্যক্ত এলাকা ও ব্যর্থ উন্নয়ন প্রকল্পের উদাহরণে। অবকাঠামোগত দুর্বলতা, নিরাপত্তা সংকট, ঋণপ্রাপ্তির জটিলতা ও উদ্যোক্তাদের অনাগ্রহের কারণে শিল্পনগরীটি এখন জনবিচ্ছিন্ন।

লালমনিরহাট শহরের উপকণ্ঠে ১৫ দশমিক ৬ একর জায়গা নিয়ে ১৯৮৭ সালে যাত্রা শুরু করে বিসিক (বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন) শিল্পনগরী। শুরুতে ১০৭টি প্লট তৈরি করে ২৯ জন উদ্যোক্তাকে বরাদ্দ দেওয়া হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্লটের ব্যবহার অনিয়মিত হয়ে পড়ে। বর্তমানে এই শিল্পনগরীতে কার্যকর অবস্থায় রয়েছে মাত্র ৩০টির মতো প্রতিষ্ঠান। এর বেশিরভাগই আবার গুদামঘর, পরিত্যক্ত স্থাপনা কিংবা ভাড়ায় পরিচালিত ক্ষুদ্র ব্যবসা।

উদ্যোক্তা সংকটে ধুঁকছে লালমনিরহাটের বিসিক

বিসিক শিল্পনগরীর চারপাশে নেই কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী বা পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা। সন্ধ্যা নামলেই এলাকা ঘিরে ফেলে ঘোর অন্ধকার, নেমে আসে আতঙ্ক। এলাকাটি এখন মাদকসেবী, চোর ও দুষ্কৃতকারীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

একজন স্থানীয় শ্রমিক বলেন, রাতে ভয় লাগে। মাদকাসক্ত আর চোরেরা এসে মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।

উদ্যোক্তা সংকটে ধুঁকছে লালমনিরহাটের বিসিক

সিয়াম প্লাস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী শহীদুল ইসলাম বলেন, ব্যবসা করতে গেলে নিরাপত্তা, রাস্তা, বিদ্যুৎ সবকিছুর দরকার। এসব না থাকলে কেউ এখানে বিনিয়োগ করবে না। আমরা বিনিয়োগ করে কোনো রকমে দিন পার করছি।

বর্তমানে বিসিক শিল্পনগরীতে চালু আছে মাত্র ৮ থেকে ১০টি ক্ষুদ্র কারখানা। এরমধ্যে রয়েছে হিমাগার, ফার্নিচার ও প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানা। তারাও টিকে আছে নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে। এছাড়া প্লট পেয়েও বহু উদ্যোক্তা সেখানে কারখানা নির্মাণ করেননি। আবার কেউ কেউ শুরু করেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বন্ধ করে দিয়েছেন কার্যক্রম। জ্বালানি সংকট, বেহাল সড়ক ও ব্যাংক ঋণের অভাব সব মিলিয়ে নতুন উদ্যোক্তারা এ জায়গায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

উদ্যোক্তা সংকটে ধুঁকছে লালমনিরহাটের বিসিক

লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মজমুল হোসেন প্রামানিক বলেন, লালমনিরহাট বিসিক শিল্পনগরীতে অনেক বেশি সার্ভিস চার্জ রাখা হয়। আশপাশের জমিগুলোর সার্ভিস চার্জ বা দাম খুবই কম। এই বৈষম্য দূর করা গেলে ঘুরে দাঁড়াবে বিসিক শিল্প নগরীটি।

শিল্পনগরীর উপ-ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমরা কিছু প্লট পুনঃবরাদ্দের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে নিরাপত্তা দেওয়াল বা বড় অবকাঠামো নির্মাণে বাজেট সীমিত। লাইটিং ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় করতে হবে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।