ময়মনসিংহে মাছের দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতা
ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। একইসঙ্গে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে মাছের দামও। বাড়তি দামে ক্ষুব্ধ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজার ঘুরে এই তথ্য জানা যায়।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে চায়না গাজর ১১০, টমেটো ১১০, চিকন বেগুন ৮০, করলা ৮০, কাঁকরোল ৭০, চিচিঙ্গা ৭০, শসা ৬০, ঢ্যাঁড়স ৯০, পটোল ৬০, ঝিঙে ৭০ ও ধুন্দল ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া স্থিতিশীল অবস্থায় সিম ১২০, কচুর মুখি ৩০, কাঁচামরিচ ১৬০, দেশি গাজর ৮০, পেঁপে ২০, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, লাউ ৬০ টাকা পিস, কাঁচকলা ৪০ টাকা হালি ও লেবু ২০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।

একই বাজারে মাছের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে মৃগেল ২৮০-৩৩০, শিং ৩৪০-৬৩০, কৈ ২৫০-৩৪০, পাবদা ৩৮০-৫০০, শোল ৬০০-৮৮০, ট্যাংরা ৫৪০-৮৬০ ও টাকি ৪২০-৫৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাতলা ৩৫০-৪১০, পাঙাশ ২১০-২৪০, রুই ৩১০-৪১০, কালবাউশ ৩৩০-৩৯০, সিলভার কার্প ২২০-২৮০ ও তেলাপিয়া ২১০-২৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া আগের দামেই ব্রয়লার মুরগি ১৬০, কক মুরগি ৩০০, গরুর মাংস ৮০০, খাসির মাংস ১১৫০ টাকা কেজি, ফার্মের মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালি এবং দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন
সীতাকুণ্ডে কারখানায় মেশিনের নিচে চাপা পড়ে শ্রমিক নিহত
সিন্ডিকেটের কবলে সার-বীজ, লাগামহীন মূল্যে দিশাহারা সবজি চাষিরা
দুর্গাপূজায় ৬ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি
ব্যাগ হাতে সবজি কিনছিলেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, প্রায় সব ধরনের সবজির দামই বেড়েছে। এতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকজন। অনেকে চাহিদার তুলনায় কম কিনে বাড়ি ফিরছেন। বাজার মনিটরিং দুর্বল থাকায় অসাধু ক্রেতারা ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করছে।
মাছ কেনার সময় কথা হয় আব্দুল হাই নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, দিন যত যাচ্ছে মাছের দামও বাড়ছে। অথচ বাজারে মাছের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট ফাঁকা করা হচ্ছে।
দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা আজিজ মিয়া বলেন, ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় বাজারে সবজির সরবরাহ কম। আড়তে সবজির দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে।
মাছ বিক্রেতা রিপন মিয়া বলেন, পাইকারিভাবে মাছের দাম বেড়েছে। ফলে খুচরা বিক্রেতারা যৎসামান্য লাভ করে মাছ বিক্রি করছে। দাম বাড়ার পেছনে খুচরা বিক্রেতাদের কারসাজি নেই।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, এ বছর ৩৩ হাজার ৪৬০ হেক্টর জলমহাল থেকে ৪ লাখ ১৮ হাজার ৬৪৫ টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলা দেশে মোট উৎপাদনের ১২ শতাংশ মাছ যোগান দেয়। এখান থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাকে শিং, মাগুর, পাঙাশ, তেলাপিয়া, পাবদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সারাদেশে যাচ্ছে। সে অনুযায়ী মাছের দাম বাড়ার পরিবর্তে কমে যাওয়ার কথা। হয়ত সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে মাছের দাম বেড়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, আমরা বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয়েছি। অভিযানের সময় ন্যায্য দামে বিক্রি হলেও পরে সুযোগ বুঝে আবারও অসাধু বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেন। বাজারগুলোতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এফএ/জিকেএস