পর্যটকে মুখর কক্সবাজার সৈকত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৪:১৩ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। সাপ্তাহিক ছুটিতে মধ্যেই শুরু হয়েছে এবারের পর্যটন মৌসুম। ফলে, বিপুল পর্যটক উপস্থিতিতে সৈকতের শহর কক্সবাজারে শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুমের আমেজ। পর্যটন জোনের নতুন সাজের হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজ ও পর্যটনসেবী প্রতিষ্ঠানগুলো ভরপুর পর্যটকে। উৎসবমুখরতায় ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে নতুন আশার আলো।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে উৎসাহ-উদ্দীপনায় দৃষ্টিনন্দন র‌্যালির মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় বিশ্ব পর্যটন দিবসকে। কক্সবাজারের নবাগত ডিসি মো. আ. মান্নানের নেতৃত্বে বের হওয়া র‌্যালিটি হোটেল-মোটেল জোনের প্রধান ও উপসড়ক প্রদক্ষিণ করে। ‘টেকসই উন্নয়নে পর্যটন’ এ স্লোগানে এবারের দিবসটি পালিত হচ্ছে। কক্সবাজারের বিপুল পরিমাণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরিকল্পিতভাবে মাঠে নেমেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

একপাশে নীল সমুদ্র অপপাশে সবুজ পাহাড়-মাঝখানে ঝাউবীথীর সারি নিয়ে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ কালো পিচঢালা মেরিন ড্রাইভের সম্মিলন পর্যটকদের মনে নৈসর্গিক আনন্দ দিচ্ছে। তবে এ সমুদ্র-পাহাড়ের মিতালি ছাড়া পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজারে আর তেমন কিছু নেই। এরপরও যান্ত্রিক জীবনের অবসাদ কাটাতে সাপ্তাহিক ছুটি ও পর্যটন দিবসে বেলাভূমিতে ভিড় জমিয়েছেন লাখো পর্যটক। সমুদ্র দর্শন, নোনাজলে স্নান, হিমছড়ি-ইনানী সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা।

পর্যটকে মুখর কক্সবাজার সৈকত

কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল বলেন, কয়েক দশক ধরে পর্যটন বিকাশ হলেও এখানে সৈকতের বেলাভূমি ও নোনাজল এবং হোটেল কক্ষে অবস্থান ছাড়া পর্যটকদের বিনোদনের জন্য গড়ে ওঠেনি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত কোনো পার্ক, অ্যামিউজমেন্ট জোন কিংবা বৈদেশিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করার আন্তর্জাতিক মানের ব্যবস্থা। এতে বহুমুখী অপার সম্ভাবনা থাকা সত্তেও পরিকল্পনা আর কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে থমকে আছে পরিকল্পিত পর্যটনের বিকাশ।

আরও পড়ুন:
সেন্টমার্টিনে এখনো গত মৌসুমের হতাশার ছাপ

টেকসই পর্যটনের নতুন দিগন্ত টি-ট্যুরিজম

পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে, অতীতে শীতের আগে-পরে কক্সবাজার পর্যটক উপস্থিতি হিসাবে ধরা হতো পর্যটন মৌসুম। সময়ের বিবর্তনে এ ধারণা বদলে এখন পুরো বছরই বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত দেখতে কম-বেশি পর্যটকের আনাগোনা থাকে। বিশেষ করে ছুটির দিনে পর্যটকে মুখর থাকে সৈকত তীরসহ পর্যটনস্পট সমূহ।

শনি ও শুক্রবার কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা, লাবনী, শৈবাল, কলাতলীসব পয়েন্টে পর্যটক-দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ভ্রমণে আসা মানুষগুলোর অনেকে নোনাজলে স্নান, জেড স্কী, বিচ বাইক ও ঘোড়ার পিঠে চড়ছেন। প্রিয় এ মুহূর্তগুলো ক্যামেরার ফ্রেমে গাঁথছেন অনেকে।

পর্যটকে মুখর কক্সবাজার সৈকত

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিল্কী বলেন, এখন সারা বছরই পর্যটক আসছে। তাই মৌসুম নিয়ে বিশেষ তোড়জোড় নেই। পর্যটন দিবস, সাপ্তাহিক ছুটি ও দুর্গাপূজা মিলিয়ে আগামী ৪ অক্টোবর পর্যন্ত কক্সবাজারে লোক সমাগম থাকবে বলে আশা করা যায়। সেভাবে হোটেল-মোটেলগুলো কমবেশি আগাম বুকিং হয়ে আছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর হতে পর্যটকে সরগরম অবস্থা কক্সবাজারে। প্রশাসনসহ সবার দৃষ্টিতে সেবার মান নিশ্চিতের তাগাদা বিরাজমান।

কক্সবাজার বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের কক্সবাজার অঞ্চলের ব্যবস্থাপক রায়হান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে কক্সবাজারে বর্ণাঢ্য র‌্যালি করা হয়েছে। হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউসসহ পর্যটনসেবী নানা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা র‌্যালিতে অংশ নেন। দিবসটি উপলক্ষে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও পর্যটন মেলাসহ নানা আয়োজন রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে সৈকত এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সারা বছরই নিরাপত্তা থাকে, তবে এখন আরও জোরদার করা হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান বলেন, আমরা উচ্ছ্বাসে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন করেছি। সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এবারে পর্যটন মৌসুম বিপুল পর্যটক সমাগমের মাধ্যমে আড়ম্বরপূর্ণভাবে শুরু হয়েছে। আগত পর্যটকরা যেন কোনো ধরনের হয়রানিতে না পড়েন কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ আদালত হোটেল-মোটেল জোনে নজর রাখছে। যেকোনো ধরনের অভিযোগ বিচ এলাকার তথ্য সেবা কেন্দ্রে বলতে পর্যটকদের অনুরোধ করেন জেলা প্রশাসক।

সায়ীদ আলমগীর/এমএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।