বরিশালে পাইকারিতে ১০০ টাকার কাঁচামরিচ খুচরায় ১৫০
বরিশালে বেশ কিছুদিন ধরে পাইকারি বাজারে সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও দেড়গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। ফলে বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। পাইকারিতে ১০০ টাকা কেজি কাঁচামরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। একইভাবে অন্য সবজিও বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বরিশালের একমাত্র পাইকারি সবজির বাজার বহুমুখী সিটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের সবজি বেশ কিছুদিন ধরেই একই দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে কাঁচামরিচ গত সপ্তাহে ৩০০-৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য সবজি করলা ৪০ টাকা, শসা ২৫ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৩৫ টাকা, লাউ ৩০ টাকা, কাঁচাকলা হালি ৩০ টাকা, লেবু হালি ১০-১২ টাকা, বেগুন লম্বা ৩০-৪০ টাকা, বেগুন গোল ৫০-৬০ টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শীতকালীন সবজি বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা ও সিম ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে পাইকারি বাজার থেকে এসব সবজি কিনে খুচরা বিক্রেতারা দেড় থেকে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন নগরীর বিভিন্ন বাজারে।
নগরীর পোর্ট রোড বাজার, বাংলাবাজার বাজার, সাগরদী বাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচামরিচ ১৩০-১৫০ টাকা, করলা ৬০-৬৫ টাকা, শসা ৩৫-৪০ টাকা, বরবটি ৭০-৭৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০-৪৫ টাকা, লাউ ৩৫-৪০ টাকা, কাঁচাকলা হালি ৩৫-৪০ টাকা, লেবু হালি ১৫-২০ টাকা, বেগুন লম্বা ৪০-৪৫ টাকা, বেগুন গোল ৬০-৮০ টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শীতকালীন সবজি বাঁধাকপি ৫০ টাকা, ফুলকপি ৭০-৮০ টাকা ও শিম ১৮০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৬০-১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৭০-২৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৫০-২৭০ টাকা দরে। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ১১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে বিভিন্ন মাছ গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে রুই মাছ ৩০০-৪৫০ টাকা, টেংরা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, ঘেরের তেলাপিয়া ১২০-১৪০ টাকা, পাঙাস মাছ ১৮০-২২০ টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৫৫০-৮৫০ টাকা, পাবদা ২৫০-৪০০ টাকা, মাঝারি ভেটকি ৪০০ টাকা।
বাংলাবাজারে আসা মোস্তফা বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই সবজির দাম অতিরিক্ত। কোনো সবজির দাম ৭০-১০০ টাকার নিচে নেই। যে কোনো অজুহাতে সবজির দাম বেড়ে যায়। যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খুবই কষ্টকর। এছাড়া মাছের গায়ে তো হাত দেয়াই যায় না। ইলিশ মাছ শিকার বন্ধ থাকায় অন্যান্য মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক।
বাজার করতে গিয়ে জিনিসপত্রের দাম নিয়ে একই কথা বলেন সবুজ হাওলাদার ও খাইরুল ইসলাম। তারা বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে সবজি ও মাছের বাজার অস্থির। ১ হাজার টাকা নিয়ে বাজারে গেলে ৫ জনের সংসারে এখন একদিনের বাজার করা যায় না। দুই ধরনের সবজি কিনতেই ২৫০-৩০০ টাকা চলে যায়। অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতে হিমশিম খেতে হয়। এ দিকে সরকারের দ্রুত নজর দেওয়া উচিত।

নগরীর বাংলাবাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা তৌহিদ জানান, পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা সবজির দাম কিছুটা বেশি হবে। কারণ পাইকারি বাজার থেকে সবজি কিনে লেবার খরচ, ভ্যান ভাড়া দিয়ে সবজি আনতে হয়। তার মধ্যে বৃষ্টির কারণে সবজায়গাতেই খরচ কিছুটা বাড়িয়ে দিতে হয়। পরে বাজারে বিক্রি করতে হলে ইজারা, বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। তাই খুচরা বাজারে সবজি কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।
বরিশালে সবজির পাইকারি বাজার বহুমুখী সিটি মার্কেটের দুলাল বাণিজ্যালয়ের প্রোপাইটর মো. আমিন শুভ জাগো নিউজকে জানান, পাইকারি বাজারে বেশ কিছুদিন ধরেই সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে বৃষ্টি কমলে সবজির দাম আরো কমবে। তবে পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে সবজির দাম কিছুটা বেশি। খুচরা ব্যবসায়ীরা নানান খরচের দোহাই দিয়ে আরও বেশি দামে বিক্রি করছে।
শাওন খান/এমএন/জিকেএস