বছর না যেতেই বন্যায় ভেসে গেছে সেতু, দুর্ভোগে ৫ শতাধিক পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৭:২৩ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
কাদা-পানি মাড়িয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে পার হচ্ছেন এক যুবক/ছবি-জাগো নিউজ

বন্যায় ভেঙে ভেসে গেছে সেতু। কয়েকটি জায়গায় সেতুর খণ্ডিতাংশের কিছু দাঁড়িয়ে ও কিছু পানিতে ডুবে আছে। এভাবে সাত বছর ধরে পড়ে আছে সেতুটি। ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পাঁচ শতাধিক পরিবার।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দিগলটারি এলাকা। ওই এলাকার দালাইলামা ছড়ার ওপর নির্মিত সেতুটি সাত বছর ধরে এভাবেই পড়ে রয়েছে।

বছর না যেতেই বন্যায় ভেসে গেছে সেতু, দুর্ভোগে ৫ শতাধিক পরিবার

দিগলটারি বিজিবি ক্যাম্পের পূর্বে এবং ডিগ্রিচর এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এই ভাঙা সেতুর কারণে বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই পাড়ের অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবারকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভারত থেকে আসা গিরিধর নদীর পানি এই এলাকার প্রধান প্রবাহ। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি উপচে দুই পাশে ছড়িয়ে পড়ে। বন্যা শেষ হলেও নিচু এলাকা হওয়ায় সেখানে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে মানুষের চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এই ভাঙা সেতুর কারণে দুই পাড়ের মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অসুস্থ রোগী, শিক্ষার্থী এবং কৃষকরা।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণের মাত্র এক বছরের মাথায় ২০১৭ সালের বন্যায় সেটি ভেঙে ভেসে যায়। এরপর থেকে স্থানীয়রা কার্যত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোসলেম উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা ৫০০-৭০০ মানুষ এখানে বসবাস করি। রাস্তাঘাট এমনিতেই কাঁচা, তার ওপর সেতুটি এক বছর না যেতেই ভেঙে পড়েছে। ছেলেমেয়েরা খুব কষ্ট করে স্কুল-কলেজে যাচ্ছে। চিকিৎসার অসুবিধা চরম। রোগী অসুস্থ হলে কাঁধে করে নিয়ে পারাপার করতে হয়, কোনো যানবাহন আসার উপায় নেই। বর্ষাকালে ছেলেমেয়েরা স্কুলেই যেতে পারে না, আমরাও চলাচল করতে পারি না। সরকারের কাছে দাবি, সেতুটি যেন দ্রুত পুনর্নির্মাণ করা হয়।’

বছর না যেতেই বন্যায় ভেসে গেছে সেতু, দুর্ভোগে ৫ শতাধিক পরিবার

কাদা-পানি মাড়িয়ে মোটরসাইকেল পার করছিলেন আলমগীর হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘খুব কষ্ট করে মোটরসাইকেলটি পার করলাম। কয়েকবার পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাতের বেলা চলাচল আরও ভয়ের। কারণ কোনো আলো থাকে না। বর্ষাকালে তো আমরা পুরোপুরি বন্দি হয়ে যাই। সরকারের কাছে দাবি, দ্রুত একটি টেকসই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হোক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লালমনিরহাটের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার আলম বলেন, সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে আশা রাখছি দ্রুতই কাজটি করা সম্ভব হবে।

মহসীন ইসলাম শাওন/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।