ফেনীতে বাবার বাড়ির সবখানে ছড়িয়ে তার স্মৃতি, নেই শুধু তিনি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ১২:৫৪ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে বাবার বাড়ির দিঘির পাশে বেগম খালেদা জিয়ার নিজ হাতে লাগানো নিম গাছটি, ঘরের ভেতর বসার চেয়ারটি, ছোট্ট সেই খাট কিংবা খাবারের টেবিল সবকিছুতেই যেন লেগে আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেজা জিয়ার হাতের ছোঁয়া।

জানা গেছে, সবশেষ ২০০৮ সালেও ফেনীর ফুলগাজীতে বাবার বাড়িতে এসে দাদা সালামত আলী মজুমদারের কবর জিয়ারত করে শুরু করেন নির্বাচনি প্রচারণা। খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে আজ সেই বাড়িতেই নেমে এসেছে রাজ্যের নীরবতা।

বেগম জিয়ার চাচাতো ভাই শামীম হোসেন মজুমদার বলেন, বাড়িতে আসলে তিনি বড়দের কে যেমন শ্রদ্ধা করতেন। তেমনি ছোটদেরকে অনেক বেশি আদর করতেন।

খালেদা জিয়ার চাচাতো ভাই জাহিদ হোসেন মজুমদার বলেন, খালেদা জিয়াকে হারিয়ে আমরা আজ শোকে মুহ্যমান। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের একটা চাবি। নির্মম জেল জুলুমেও তিনি দেশ ছেড়ে যাননি। খালেদা জিয়া ছিলেন এ মাটির সন্তান। তার চলে যাওয়ার অপূরণীয় ক্ষতি জাতি কখনো পোষাতে পারবে না।

পরিবারের সদস্যরা জানান, বাড়ির পাশেই দিঘির মাছ খুব পছন্দ করতেন বেগম জিয়া। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর হেলিকপ্টার যোগে ফেনীতে আসেন তিনি। তাকে বহন করা হেলিকপ্টারটিকে আধা ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে দিঘির মাছ নিয়ে ঢাকায় ফেরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও বাড়ির প্রতিটি ধুলি-কণার সঙ্গে মিশে আছে বেগম জিয়ার হাজারো স্মৃতি। বাড়ির পাশে সানবাঁধানো ঘাটে বসে গল্প করতেন ভাইদের সঙ্গে। একজন প্রধানমন্ত্রী হয়েও খুব সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন তিনি।

ফেনীতে বাবার বাড়ির সবখানে ছড়িয়ে তার স্মৃতি, নেই শুধু তিনি

গ্রামের আব্দুল আলিম বলেন, তিনি শুধু আমাদের গর্ব নন, তিনি বাংলাদেশের বাতিঘর ছিলেন। তাকে হারিয়ে আজ পুরো এলাকাবাসী শোকে স্তব্ধ।

নিজ পৈত্রিক নিবাসে জনসাধারণের জন্য বেগম জিয়া নির্মাণ করেছেন মাদরাসা, মসজিদ, স্কুল-কলেজসহ বহু স্থাপনা। বেগম জিয়ার মৃত্যুতে ফুলগাজীসহ ফেনী জেলাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

খালেদা জিয়ার পারিবারিক নাম খালেদা খানম পুতুল। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তার দাদা হাজী সালামত আলী, নানা জলপাইগুড়ির তোয়াবুর রহমান। বাবা ইস্কান্দার মজুমদার এবং মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। দিনাজপুর শহরের মুদিপাড়ায় তাঁর জন্ম। আদি পৈতৃক নিবাস ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মজুমদার বাড়ি।

খালেদা জিয়া পাঁচ বছর বয়সে দিনাজপুরের মিশন স্কুলে ভর্তি হন। এরপর তিনি দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। একই বছর তিনি জিয়াউর রহমানকে বিয়ে করেন। এর পর থেকে তিনি খালেদা জিয়া বা বেগম খালেদা জিয়া নামে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি স্বামীর সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানে বসবাস শুরুর আগে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত দিনাজপুরের সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশোনা করেন।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।