সবাই তাকে আদর করে ডাকে মুন্না ভাই


প্রকাশিত: ০৩:৫১ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মাসখানেক ধরে চটপটির দোকানে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে তাকে। বিকেল ৫টা থেকে রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত দোকানে কাজ করে। ক্রেতাদের কখনো চটপটি, ছোলা বুট আবার ফুচকা দিচ্ছে। আবার খাবার পানিও নিয়ে আসতে হচ্ছে তাকে। যার কথা বললাম সে হচ্ছে মুন্না। সবাই আদর করে ডাকে মুন্না ভাই।

প্রতিদিন বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ আড্ডায় মশগুল হয়ে উঠে নওগাঁ শহরের দয়ালের মোড়। এ এলাকায় বেসরকারি ক্লিনিক গড়ে উঠায় ওষুধের দোকানের পাশাপাশি রয়েছে খাবারের হোটেল। আর ফুটপাতে গড়ে উঠেছে চা, চটপটি ও ফলের দোকান।

ফুটপাতে বকুল চটপটির দোকানে কাজ করছেন মুন্না। প্রতিদিন বিকেল থেকে শুরু হয় তার কাজ। বিনিময়ে পায় প্রতিদিন ৫০ টাকা। পড়াশুনার পাশাপাশি বিকেল করে চটপটির দোকানে কাজ করে। পড়াশুনা করে শহরের চক এনায়েত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে। পড়াশুনায় মোটামুটি ভাল। ক্লাশ রোল ৮।

মুন্নার বাড়ি দয়ালের মোড়ের ভেতর বউ বাজারের পাশে। বাবা আব্দুল মান্নান বিদেশ থাকে। মা সংসার দেখাশুনা করে। আর বড় বোন পান্না ঢাকায় গার্মেন্টস এবং বড় ভাই শাকিল লেদে ঝালাইয়ের কাজ করে। সে সবার ছোট।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্রেতাদের ভিড় এতো বেশি ছিল যে মুন্না কথা বলার সময় পাচ্ছিলো না। অবশ্য ক্রেতাদের ভিড় কমলে তার সঙ্গে কথা হয়। মুন্না বলে, সে ভালভাবে পড়াশুনা করে বড় হতে চাই। পড়াশুনা শেষ করে হয় শিক্ষক অথবা বড় ডাক্তার হবে।

তুমি দোকানে কাজ করো কেন এমন প্রশ্নে মুন্না বলে এখান থেকে যে টাকা পাই তার কিছু খরচ করি। আর বাকি টাকা আমার একটা মাটির ব্যাংকে জমা রাখি। টাকা জমিয়ে কি করতে চাও এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে সে নারাজ। অনেক জড়াজড়িতে অবশ্য বলে ভাল একটা স্ক্রিন টার্চ মোবাইল ফোন কিনব। ফোন দিয়ে আমার ভালো ছবি উঠাবো, গান শুনবো।

চটপটির দোকানের মালিক বকুল বলেন, আমার একার পক্ষে ক্রেতাদের ভিড় সামাল দিতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়। এজন্য মুন্নাকে কাজে একটু সহযোগিতার জন্য নিয়েছি। কাজে তার মনোযোগও ভাল। ক্রেতাদের কাছ থেকে হিসেব মতো টাকা নেয়।

আব্বাস আলী/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।