জয়পুরহাটে মিউজিকা আলু চাষে সাফল্য
জয়পুরহাটের কালাইয়ে স্বল্প সময়ে অধিক ফলনশীল, মোজাইক ভাইরাসমুক্ত মিউজিকা আলু চাষের অভাবনীয় সফলতা এলাকার কৃষকদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
সরেজমিনে উপজেলার বৈরাগীরহাট সাউথ পোল কোল্ড ষ্টোরেজ (হিমাগার) সংলগ্ন মিউজিকা আলুর খামারে গিয়ে দেখা গেছে, নেদারল্যান্ড থেকে আমদানীকৃত ওই আলুর বীজ কৃষক পর্যায়ে বিতরণ না করে পরীক্ষামূলকভাবে হিমাগার কর্তৃপক্ষ নিজস্ব খামারের সাড়ে ২২ বিঘা জমিতে এই নতুন জাতের আলু চাষ করে ৬০ দিনের মাথায় ওই আলু উত্তোলন করে অভাবনীয় ফলন পেয়েছেন। শতক প্রতি ফলন হয়েছে প্রায় ১৮০ কেজি বা সাড়ে ৪ মণ হারে। এতে করে এলাকার কৃষকদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। সেই সাথে আগামীতে এ জাতের আলু ব্যাপক হারে চাষ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
বৈরাগীরহাটের আলু চাষী জাকারিয়া বলেন, কম সময়ে কম খরচে বেশী ফলন হয়- মিউজিকা আলু বিষয়ে এমন কথা শুনে পরীক্ষামূলকভাবে এবারে আমি সাউথ পোল হিমাগার থেকে বীজ সংগ্রহ করে ২ বিঘা জমিতে এ আলু চাষ করে মাত্র ৬০ দিনের মাথায় আলু তুলে প্রতি শতকে গড়ে সোয়া চার মণ হারে ফলন পেয়েছি এবং অন্য আলুর চেয়ে দাম মণ প্রতি ১০০ টাকা করে বেশি পেয়েছি। তাই আগামীতে আমার সব জমিতেই এ আলু চাষ করার কথা ভাবছি।
হিমাগারের পার্শ্ববর্তী বহুতি গ্রামের জাহেদুল ইসলাম, সাঁতার গ্রামের সায়েম আলী, বাইগুনি গ্রামের জালাল উদ্দিন, থুপসারা গ্রামের আতাউর রহমান, পাঠানপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক সহ এলাকর অনেক কৃষক জানান, অধিক ফলনের আশায় আগামীতে তারা মিউজিকা জাতের আলু চাষ করবেন।
সাউথ পোল হিমাগারের ব্যবস্থাপক এস.এম তারেক বলেন, আলু চাষ করে লোকশান গুনতে থাকা হতাশ কৃষকদের ব্যাপক চাহিদা থাকায় সবাইকে না পারলেও বেশ কিছু কৃষককে ভাইরাস মোজাইক মুক্ত উন্নত জাতের এই মিউজিকা আলু বীজ ইতোমধ্যে সরবরাহ করেছি।
অন্যান্য জাতের আলু চাষে ৯০-১০০দিন সময় লাগে সেখানে ‘মিউজিকা’ জাতের এই আলু চাষে সময় লাগবে ৬০-৬২ দিনের মতো। এতো অল্প সময়ের মধ্যে ফলনও বেশী হয় । পরীক্ষামূলক ভাবে ২৮জন কৃষক এ জাতের আলু চাষ করে একদিকে ফলন বেশী পেয়েছেন, অন্যদিকে বাজারে চাহিদা থাকায় বেশি দামে বিক্রি করে তারা লাভবানও হয়েছেন। তাই আগামীতে ব্যাপকহারে এ আলু চাষ হবে বলে তিনি আশাবাদী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মুহাম্মদ আহসান শহীদ সরকার বলেন, মোজাইক ভাইরাস মুক্ত মিউজিকা আলু ব্যাপকহারে চাষ করে কৃষকরা কম খরচে, কম সময়ে ও কম পুঁজি ব্যয় করে অধিক লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করি। তাছাড়া দেশী ও বিদেশী বাজারে এ আলুর চাহিদা থাকায় বেশি দাম বিক্রি করতে পারবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এসএইএচ/এমএস