ফতুল্লা লঞ্চ টার্মিনালের বেহাল দশা


প্রকাশিত: ০৫:৪৫ এএম, ০৫ মে ২০১৭

বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা লঞ্চ টার্মিনালের এখন বেহাল দশা। লঞ্চঘাটের বিভিন্ন স্থানের স্লাপ ভেঙে যাতায়াতের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। টার্মিনালে নেই কোনো যাত্রীছাউনী ও টয়লেট। আর এসবের জন্য বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন যাত্রী ও ইজারাদার।

ঝড়-বৃষ্টিতে যাত্রীরা যে টার্মিনালে গিয়ে অবস্থান করবে তার কোনো সু-ব্যবস্থা নেই। টার্মিনালের বেহাল দশার কারণে যাত্রীরা এ টার্মিনাল দিয়ে যাতায়াত কম করছেন। কষ্ট হলেও ফতুল্লার টার্মিনাল দিয়ে চলাচল না করে ঢাকার সদর ঘাট দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। এ লঞ্চ টার্মিনালটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উধাসিনতার কারণে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। এতে করে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীসাধারণকে।

এছাড়া রাতের বেলায় লঞ্চ থেকে যাত্রীরা ওঠানামা করতে গিয়ে প্রায় সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। তবে লঞ্চ টার্নিমালটির বেহাল দশার কারণে ঝুকিপূর্ণ ভাবে যাতায়াত না করে অন্য স্থান দিয়ে যাতায়াত করায় টার্মিনালের ইজারাদার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রতিদিন ইজারাদারের যে হারে টোল আদায় করার কথা তার চেয়ে অনেক কম টোল আদায় হচ্ছে। আর ফতুল্লা লঞ্চ টার্মিনালের কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার দায় স্বীকার করেছেন বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মকর্তা।

ফতুল্লার লঞ্চ টার্মিনালের বেহাল দশার কারণে যাত্রী সাধারণসহ মালামাল ওঠানামা কম করায় আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান বরাবার ইজারাদার ইকবাল হোসেন চৌধুরী কয়েক দফা লিখিত আবেদন করেছেন।

Narayanganj2

ফতুল্লা লঞ্চ টার্মিনালে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, টার্মিনালটি গুরুত্বপূর্ণ লঞ্চঘাট হিসেবে পরিচিত। বরিশাল, ভোলা, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলার লঞ্চ ফতুল্লা টার্মিনাল দিয়ে যাতায়াত করতো। প্রতিদিন টার্মিনালে লঞ্চের জন্য প্রচুর যাত্রী ভিড় করত। কিন্তু এখন এর চিত্র ভিন্ন। এ টার্মিনাল দিয়ে আগের মত লোক যাতায়াত করে না। কোনো ধরনের মালামালও বেশি একটা ওঠানামা করে না।

সালাম নামের এক যাত্রীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এ লঞ্চ টার্মিনাল দিয়ে যাতায়াত করতে একটু হিমশিম খেতে হয়। টার্মিনালের বিভিন্ন স্থানে স্লাপ ভেঙে রয়েছে। নেই কোনো যাত্রী ছাউনী। একটু ঝড় আসলে দাঁড়িয়ে থাকার মত কোনো অবস্থা নেই। গুরুত্বপূর্ণ একটি টার্মিনাল হিসেবে যে ধরনের সু-ব্যবস্থা থাকার দরকার তার কোনোটাই নেই।

ইজারাদার ইকবাল হোসেন চৌধুরী জানান, যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু টার্মিনালে যাত্রীছাউনী ও টয়লেটসহ অনেক সমস্যার কারণে যাত্রীদের কথা শুনতে হয়। এতে করে টার্মিনালে আগের তুলনায়  অনেক যাত্রী কম আসা যাওয়া করে। রাতের বেলা ফতুল্লা টার্মিনালে বিভিন্ন রুটের লঞ্চ এসে আগের মত থামছে না। এক কোটি ৮০ লাখ টাকায় ইজারা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছি। তুলনা মূলক ভাবে টোল আদায় হচ্ছে না। এতে করে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এ নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান বরাবার আবেদন করা হলেও এখনো কোনো ধরনের সুফল পাচ্ছি না।

ঢাকার বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত পরিচালক রফিকুল ইসলাম টার্মিনালের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে জানান, ফতুল্লা লঞ্চ টার্মিনাল একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাট। সকাল থেকে গভীর রাত্র পর্যন্ত বিভিন্ন রুটের লঞ্চ এসে থামে। টার্মিনালে যাত্রী ছাউনী, টয়লেটসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে আমরা জানতে পেরেছি। এসব সমস্যার কারণে এ টার্মিনাল দিয়ে আগের চেয়ে অনেক লঞ্চ কম ঘাট ধরছে।

এতে করে ইজারাদার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা আমাদেরকে অবগত করেছে। টার্মিনালটি আধুনিকায়ন করতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি আগামী অর্থ বছরে টার্মিনালের সব ধরনের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

শাহাদাত হোসেন/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।