পঞ্চগড়ে ছিটমহলে ৪০শতাংশ জনগণনা সম্পন্ন
পঞ্চগড়ের বিভিন্ন ছিটমহলে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ হেডকাউন্টিং চলছে। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে সোমবার পঞ্চগড় সদর, বোদা এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার ৩৬টি ভারতীয় ছিটমহলে ১৮টি জরিপ ক্যাম্পে এই হেডকাউন্টিং শুরু হয়। অস্থায়ী এসব ক্যাম্পে এসে তথ্য হালনাগাদ করছেন ছিটমহলের অধিবাসীরা। এজন্য প্রতিটি ক্যাম্পেই দিনভর ছিটমহলবাসীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত জেলার ৩৬টি ভারতীয় ছিটমহলের প্রায় ৪০ শতাংশ সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ভারত-বাংলাদেশের যৌথ হেডকাউন্টিং এর তথ্য অনুযায়ী চলতি সমীক্ষার তথ্য হালনাগাদ করা হচ্ছে। জনগণনার দুইদিনে মঙ্গলবার পর্যন্ত সদর উপজেলার ৭টি ছিটমহলের ১৮ জন এবং বোদা উপজেলার ২৩টি ছিটমহলের ১৬ জনসহ ৩৪ জন ছিটমহলবাসী ভারতে বসবাসের কথা বলে ফরম পূরণ করেছেন। এসব ছিটমহলে নতুনভাবে ১৮১ জন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুজনিত কারণে অথবা এলাকা ছেড়ে যাওয়ায় বাদ পড়েছেন ৩৮ জন। ২০১১ সালের ভারত-বাংলাদেশ যৌথ জনগণনা অনুযায়ী পঞ্চগড়ের ৩৬টি ছিটমহলের লোক সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৪৩ জন।
এদিকে ভারতে বসবাসে আগ্রহীদের মধ্যে দেখা গেছে তারা অধিকাংশ ভূমিহীন এবং অতিদরিদ্র পরিবারের সদস্য। এদের অনেকের আত্মীয়-স্বজন ভারতে রয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশি ছিটমহল ছেড়ে ভারতে গেলে নগদ পাঁচ লাখ রুপি, পরিবার নির্বাহের জন্য বাসনপত্রসহ আসবাবপত্র এবং একটি করে ফ্লাটবাড়ি পাওয়া যাবে এমন আশায় কেউ কেউ জনগণনায় ভারতে বসবাসের আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
তবে ভারত সরকার এসব মানুষদের কিভাবে সহায়তা করবেন তা জানা যায়নি। আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত এই গণনা চলবে এবং ২০ জুলাই চূড়ান্ত তালিকা দুই দেশের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সদর উপজেলার ভারতীয় গারাতি ছিটমহলের হুদুপাড়া গ্রামের বিজয় বর্মণ (৬৫) বলেন, শুনেছি আমার দুই ছেলে পলাশ বর্মণ এবং আপন বর্মণ ভারতে বসবাসের কথা বলে ফরম পূরণ করেছেন। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তারা যেতে চাইলে যাবে। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে এই দেশেই থেকে যেতে চাই।
পঞ্চগড় সদর এবং বোদা উপজেলার বিভিন্ন ছিটমহলে হেডকাউন্টিং পরিচালনাকারী ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সুপারভাইজার শ্যামল কুমার দে বলেন, আমাদের শুধুই তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। কথামত নিরপেক্ষভাবে আমরা কাজ করছি। সকলেই সহযোগিতা করছেন। তবে কে কি পাবেন আর কে কি হারাবেন এসবের কিছুই জানি না আমরা।
এসএস/এমআরআই