শেরপুরে ৬ জেএমবি সদস্যের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০৮:৪১ পিএম, ২৫ জুন ২০১৮

শেরপুরে সন্ত্রাস দমন আইনের একটি মামলায় ছয় জেএমবি সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে শেরপুর স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম.এ নূর জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শহরের ঢাকলহাটী মহল্লার রাজা মিয়ার ছেলে নাজমুস শাহাদাত রানা (২৮), পূর্বশেরীর ফজলুর রহমানের ছেলে মনিরুজ্জামান মানিক ওরফে কাওসারকে (২৮), নওহাটা মহল্লার মনসুর আলীর ছেলে মারুফ হোসেন রনি (৩১), বাগরাকসা মহল্লার হাজী আতাহার আলীর ছেলে আমির হামজা খলিল (৩২), নালিতাবাড়ীর নাকশী গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে তানভীর (৩২) ও জামালপুর জেলার রানাগঞ্জ গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে সোয়েব (৩৩)।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে নাজমুস শাহাদাত রানা ও মনিরুজ্জামান মানিক ওরফে কাওসারকে ২০০৮ সালের সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশের ৮ ধারায় ৭ বছর ও ৯ ধারায় ৬ বছরসহ উভয়কে ১৩ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া মামলার অপর ৪ আসামি মারুফ হোসেন রনি, আমির হামজা খলিল, তানভীর ও সোয়েবকে ৯ ধারায় ৫ বছর ও ১২ ধারায় ৬ মাসসহ সাড়ে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। নাজমুস শাহাদাত রানাসহ ৫ আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করা হলেও অপর আসামি আমির হামজা খলিল পলাতক রয়েছে।

আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি অ্যাডভোকেট অরুণ কুমার সিংহ রায় ওই রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবির তৎপরতার বিষয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২০১০ সালের ২২ জানুয়ারি শেরপুর শহরের ঢাকলহাটী মহল্লার রাজা মিয়ার বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে রাজা মিয়ার ছেলে নাজমুস শাহাদাত রানা ও তার সহযোগী মনিরুজ্জামান মানিক ওরফে কাওসারকে আটক করা হয়। তারা জেএমবির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য বলে পুলিশ জানতে পারে। সেসময় ওই বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ১৭টি জিহাদি দাওয়াতপত্র ও বেশ কিছু সিডি-ক্যাসেটসহ নিষিদ্ধ সংগঠনের আলামত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শেরপুর সদর থানার তৎকালীন এএসআই সজীব খান বাদী হয়ে নাজমুস শাহাদাত রানা ও কাওসারসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০/৬০ জনকে আসামি করে ২০০৮ সালের সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশের ৮/৯ ধারায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

সদর থানার তৎকালীন এসআই নজরুল ইসলাম ২০১০ বছরের ১৪ মার্চ এজাহারনামীয় ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরবর্তীতে আসামিরা বিভিন্ন পর্যায়ে আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে যায় এবং একপর্যায়ে আবুল কালাম আজাদ নামে এক আসামি মৃত্যুবরণ করে। চলতি বছরের ২৩ মে ওই মামলায় ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ১৮ জুন রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে উপস্থিত ৫ আসামির জামিন বাতিল এবং অপর আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ দেয়া হয়। মামলায় বাদী, তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষেিআদালত সোমবার এ রায় দেন।

রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের ভারপ্রাপ্ত পিপি অ্যাডভোকেট অরুণ কুমার সিংহ রায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ট্রাইব্যুনাল সকল বিষয় বিবেচনা করে রায় ঘোষণা করেছেন।

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাভোকেট আব্দুল মজিদ বাদল ও অ্যাডভোকেট এমকে মুরাদুজ্জামান রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, খুব দ্রুতই এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

অপরদিকে আসামিদের পরিবারের দাবি, তারা কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য নয়। একটি বিশেষ সময়ে প্রভাবশালী মহলের রোষানলের শিকার হওয়ায় তাদেরকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে।

হাকিম বাবুল/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।