রাজা সীতারাম রায়ের রাজধানী বেদখল


প্রকাশিত: ০৫:১৭ এএম, ০৪ আগস্ট ২০১৫

১৬৫৮ খ্রীষ্টাব্দে মাগুরা জেলা সদর থেকে ২৮ কিলোমিটার পূর্বে মধুমতি নদীর তীরে চিত্র গুপ্তের ছেলে রাজা সীতারাম রায়ের রাজধানী ও বাসস্থান ছিল। বর্তমানে সেখানে দুর্গের ধ্বংসাবশেষ, কাচারি বাড়ি, রাম সাগর, দুধ সাগর, কৃষ্ণ সাগর নামের দীঘি, দোল মঞ্চ ও রাজভবনের ধ্বংসাবশেষ, সিংহদরজা ছাড়া কিছুই চোখে পড়ে না। ইতিহাস বিজড়িত রাজা সীতারাম রায়ের সেই ঐতিহাসিক বাড়িটিও এখন ভূমি দস্যুদের হাতে। রাতে চলে মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপ। ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় দখলদাররা কেউ কেউ ভুয়া দলিলপত্র তৈরি করে নিয়েছেন।

কেয়ারটেকার ছায়েম সিকদার জাগো নিউজকে জানান, ইতিহাস খ্যাত স্বাধীন চেতা রাজা সীতারাম রায়ের বাড়ি এখন অবৈধ দখলদারদের কবলে। দখলদার মুক্ত করার ব্যাপারে প্রশাসনের তেমন মাথা ব্যাথা আছে বলে মনে হয় না। রাজা সিতারাম রায়ের কাচারি বাড়ি ও দোলমঞ্চ ছাড়া আর সবই অবৈধ দখলদাররা ভেঙেচুরে সেখানে ইচ্ছেমতো ঘরবাড়ি তুলছেন। রাজার বাড়ির ইট খুলে নিয়ে নিজেদের বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে।

মহম্মদপুর উপজেলা সদরে রাজা সীতারাম রায়ের রাজধানী। রাজবাড়ির ভেতরে ও বাইরে প্রজাদের জলকষ্ট দূর করার জন্য তিনি বিশাল বিশাল দীঘি খনন করেছিলেন। সেগুলোর অধিকাংশ সংস্কারের অভাবে ভরাট হয়ে গেছে। দুধ সাগর ও পদ্ম সাগর নামের দীঘি দু’টি এখনো কালের সাক্ষী হয়ে রাজা সীতারামের স্মৃতি বহন করে চলেছে।

ইতিহাস বলে মোঘল সম্রাটের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করায় সম্রাটের সৈন্যদের সঙ্গে একাধিক সফল যুদ্ধের পর মোঘল সেনাপতি তোরাপ খার সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে স্বপরিবারে দুধসাগরে আত্ম বিসর্জন দেন।

স্থানীয় সুশীল সমাজ মনে করেন অবৈধ দখলদার মুক্ত করে স্বাধীন চেতা রাজা সীতারামের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

রাজা সীতারামের ঐতিহাসিক বাড়িটি যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে মাগুরা জেলা একটি পর্যটন নগরী হিসাবে গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

মাগুরা জেলা পরিষদ প্রশাসক, অ্যাডভোকেট সৈয়দ শরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, আমি মনে করি এটা মাগুরা জেলার একটি ঐতিহ্য এবং মাগুরা জেলার ইতিহাস রক্ষায় কাচারি ঘরটা সংরক্ষণ করা একান্ত জরুরি। দীর্ঘদিন অবহেলায় থাকার কারণে এর বেশিরভাগ জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা অপ্রতুল।

এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।