খুনেই শেষ নয়, চুরি গেল কঙ্কালও

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ১২:০৭ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সম্পত্তির লোভে শরীয়তপুর পৌরসভার চর পালং গ্রামের এসকান্দার বেপারীকে (৪২) বিষ পান করিয়ে হত্যা করা হয় গত ২০১৩ সালে। আর এখন মামলায় ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর সোমবার এসকান্দারের কঙ্কালটাও চুরির করা হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ নিহত এসকান্দার বেপারীর মা মোসা. নুর জাহান বেগমের।

নুর জাহান বেগম বলেন, ‘শরীয়তপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাশেম খান, তার স্ত্রী মনি বেগম, সদর উপজেলার সুজনদোয়াল গ্রামের বিউটি বেগম ও তার স্বামী আলমাছ সরদার জমির লোভে আমার ছেলেকে বিষ পান করিয়ে হত্যা করে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে এসকান্দারের মরদেহ দাফন করি। কিন্তু ভয়ে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারিনি। এখন আমাকেও মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছে। তাই ওদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করব। কিন্তু আবুল কাশেম খানেরা মামলার ভয়ে কবরস্থান থেকে আমার ছেলের কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে। কারণ লাশের ভিসেরা রিপোর্ট করা হয় তাহলে তারা ফেঁসে যাবে।’

স্থানীয় ছাত্তার বেপারী ও জুলেখাসহ অনেকেই জানান, এসকান্দার বেপারী মৃত্যুর আগে বিউটি বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের আড়াই বছর পর একান্দারকে ছেড়ে সুজনদোয়াল গ্রামের বাসিন্দা আলমাছ সরদারকে আবার বিয়ে করেন বিউটি বেগম। বিউটি ও এসকান্দার বেপারীর কোনো সন্তান ছিল না।

এসকান্দার বেপারীর মৃত্যুর পর ২০১৮ সালে বিউটি বেগম চক্রান্ত করে তার আগের স্বামীর জমির জাল দলিল করে যোগসাজসে প্রতিবেশী চর পালং গ্রামের আবুল কাশেম খানগংদের কাছে বিক্রি করেন। সেই জমিতে এসকান্দার বেপারীসহ তার পরিবারের পাঁচজনের জমিতে দাফন করা ছিল। জমিটি নিয়ে থানা ও কোর্টে একাধিক মামলাও চলছে।

নুর জাহান বেগমের নাতনী মরিয়ম বিবি বলেন, অভিযুক্তরা জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার নানাদের জমি দখল করেছে। সেখানে একটি কবরস্থান ছিল যেখানে এসকান্দার বেপারীকে দাফন করা হয়েছিল। কবর খুঁড়ে তার কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে অভিযুক্তরা। এখন সেই জমিতে জোর করে কবরস্থানের দেয়াল ভেঙে তারা বিল্ডিং করার জন্য ইটের দেয়াল করছে।

এ বিষয়ে সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাশেম খান বলেন, ওই ৬ শতক জমি বিউটি বেগমদের কাছ থেকে আমি কিনেছি। সেই জমিতে কবরস্থান ছিল। তাই ঘর করার জন্য কবরস্থান ভেঙেছি। তবে কঙ্কাল চুরির বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, যে কবরস্থান ভাঙা হয়েছে, সেই জমি কাশেমের ক্রয়কৃত। ওই সম্পত্তি নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ওখানে বিল্ডিং করা হবে শুনে আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হয়েছে এমন কোনো ঘটনা আমার জানা নেই।

ছগির হোসেন/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।