দুর্গম পাহাড়ে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাঙ্গামাটি
প্রকাশিত: ০৪:১৮ পিএম, ২৬ জুন ২০১৯

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকায় ম্যালেরিয়া রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের লোকজন জ্বরসহ শারীরিক দুর্বলতার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নিতে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালে তাদের শরীরে ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ১৩১ জনের দেহে ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু পাওয়া গেছে। যা গত মে মাসে পাওয়া যায় মাত্র ২৮ জনের দেহে।

কয়েকদিন ধরেই রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার দুর্গম সাজেক ও তার আশপাশের কয়েকটি এলাকায় ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাজেক ইউনিয়নের ভূঁইয়াছড়ি, উজেংছড়ি, ক্যজেইছড়ি, মিতিঙ্গাছড়ি, রুইলুই, মাচালংসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

সাজেক ইউনিয়নের ভূঁইয়াছড়ি গ্রামের ওয়ার্ড মেম্বার হীরানন্দ ত্রিপুরা লেন্দ জানান, আমার ওয়ার্ডে প্রতিদিনই কয়েকজন করে ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদেরকে স্থানীয় এনজিও ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।

মিতিঙ্গাছড়ি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা জীবন চাকমা বলেন, আমাদের গ্রামে প্রতিদিনই কেউ না কেউ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আমার পরিবারেও এ রোগ দেখা দিয়েছে। আমার স্ত্রী ও বড় মেয়ে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কপেপ্লেক্সে ভর্তি আছে।

ভূঁইয়াছড়ি গ্রামের বাসিন্দা কল্পতরু চাকমা বলেন, আমি নিজেও এ রোগে আক্রন্ত হয়ে গত কয়েকদিন ধরে ভুগছি। আমি এখানে স্থানীয় এনজিও থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি। তারা আমাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন।

ব্র্যাকের রাঙ্গামাটি জেলা কর্মকর্তা সুনীল কান্তি কুন্ডু বলেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে দুর্গম পাহাড়ে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে চিকিৎসকরা বলছেন, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও রোগটি নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি।

বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুয়েন খীসা জানান, বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক এলাকায় ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত রোগী দেখা গেলেও এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোনো রোগীর শরীরে মারাত্মক ম্যালেরিয়া (সিভিয়ার) জীবাণু পাওয়া যায়নি। সবাই সাধারণ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। নিয়মিত ওষুধ সেবনেই তারা সুস্থ হয়ে উঠবেন।

সাজেক এলাকায় এ রোগ দেখা যাওয়ার কারণ হিসেবে ডা. নুয়েন খীসা বলেন, জুমচাষি এবং জঙ্গলে বাঁশ ও কাঠ কেটে জীবিকা নির্বাহকারীরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্ষাকালে এ রোগ বহনকারী মশার উপদ্রব বাড়া এবং বিষয়টি নিয়ে অসচেতনতা ও অতিরিক্ত গরমের কারণে রাতে মশারি না টানানোর কারণে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।

সাইফুল উদ্দিন/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।