পঞ্চগড়ে শীতের সঙ্গে বাড়ছে দুর্ভোগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯
তীব্র শীত ও কুয়াশা পড়েছে পঞ্চগড়ে

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শীতের প্রকোপ বাড়ছে। কুয়াশা তেমন না থাকলেও প্রতিদিন সেখানকার তাপমাত্রা কমছে। দিনে রোদের কারণে আবহাওয়া সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও উত্তরের হিমেল হওয়ায় বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই বাড়ছে শীতের তীব্রতা, যা থাকে পরদিন সকাল পর্যন্ত। ফলে সন্ধ্যা হতেই রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ছে। রোববার সকালে সর্বনিম্ন ৮ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়।

Panchagarh-Cold

খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা

বরাবরের মতো এবারও শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুস্থ ও খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। তবে অন্য এলাকার তুলনায় তেঁতুলিয়া উপজেলায় শীতের প্রকোপ বেশি। এখানকার নিম্ন আয়ের লোকজনকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। যদিও সকালের পর সারাদিন রোদের কারণে জেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতের প্রকোপ তেমন দেখা যায় না। দুপুরের দিকে তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে। রোববার দুপুরেও জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় রোদের দাপট দেখা যায়। এ কারণে শীতের তীব্রতা তেমন অনুভূত না হলেও বিকেলের পর থেকে বদলে যেতে থাকে আবহাওয়া। সকালেও যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। শীত থেকে গবাদিপশু রক্ষায় বস্তা দিয়ে পেঁচিয়ে দেয়া হচ্ছে।

Panchagarh-Cold

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে তাপমাত্রা

চলতি মৌসুমে যথাসময়ে শীত শুরু হলে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। তেঁতুলিয়ায় কয়েক দিন ধরেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত হালকা কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমালয় থেকে ভেসে আসে ঠান্ডা বাতাসে শরীর হিম হয়ে আসে। লেপ-কম্বল ছাড়া ঘুমানো যায় না। আবার সকাল ৮টার পর থেকেই কুয়াশা কেটে যায়। ঝলমলে রোদের দেখা মেলে।

এদিকে শীতের কারণে আধুনিক সদর হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শীতজনিত কারণে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দরিদ্র শীতার্তদের জন্য প্রথম দফায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ উপজেলায় ২১ হাজার পিস শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।

তেঁতুলিয়ার শালবাহান এলাকার পাথর শ্রমিক সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এখানে প্রতি বছর শীতের প্রকোপ বেশি থাকে। এবার তেমন কুয়াশা নেই। তবে সন্ধ্যার পর থেকে তীব্র শীত অনুভূত হয়। সকালের পর থেকে রোদের কারণে শীতে তেমন কষ্ট হয় না।

Panchagarh-Cold

কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রহিদুল ইসলাম বলেন, রোববার সকালে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ৮ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। কয়েক দিন ধরে এখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। এবার তেমন কুয়াশা দেখা না গেলেও সন্ধ্যার পর থেকে শীতের তীব্রতা বাড়ছে।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, অবস্থানগত কারণে পঞ্চগড় শীতপ্রবণ জেলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতি বছর এখানে শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। প্রায় দিনই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকছে পঞ্চগড়জুড়ে। তবে এখন পর্যন্ত দিনের বেলায় পর্যাপ্ত রোদ থাকছে। এজন্য শীতের দুর্ভোগ তেমন নেই বললেও চলে।

Panchagarh-Cold

সকালে কুয়াশা কেটে গেলে উত্তরে দেখা মেলে হিমালয় শৃঙ্গের

তিনি আরও বলেন, শীত নিয়ে আমাদের যথাযথ প্রস্তুতি রয়েছে। সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ২১ হাজার শীতবস্ত্র ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। সেগুলো বিতরণ চলছে। আরও শীতবস্ত্রের জন্য চাহিদা দেয়া হয়েছে।

সফিকুল আলম/এমএমজেড/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।