দুপুর একটা বাজলেই বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে বাড়ি যান শিক্ষকরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ০৯:১০ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০২০

সকাল ৯টায় বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর নিয়ম থাকলেও শিক্ষকরা আসতে আসতে বাজে ১০-১১টা। বিদ্যালয়ে এসে কোনো রকমে দু-একটি ক্লাস নেন শিক্ষকরা। দুপুর একটা বাজতেই বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে বাড়ি যান তারা।

চার ঘণ্টায় ছয়জন শিক্ষক একটি বা দুটি বিষয়ের ক্লাস নিয়ে বাড়ি চলে যান। এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে শিশুরা। সেই সেঙ্গ দিন দিন বেসরকারি বিদ্যালয়ের দিকে ঝুঁকছে তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পদুমশহর ইউনিয়নের সন্যাসদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক নেই। অফিস সহকারী কক্ষে বসে কম্পিউটার চালাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ ছয়জনের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর থাকলেও সবাই ছিলেন অনুপস্থিত।

বিদ্যালয় থেকে একটু দূরে পদুমশহর ইউনিয়নের বাবুর বাজারে পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার কারণ জানতে চাইলে তারা জানায়, আমাদের শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নেন না। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দুই বিষয়ে পড়ানো হয়। বাকি সময় খেলাধুলা করেই শেষ। দুপুরে আমাদের ছুটি দিয়ে বাড়ি যান শিক্ষকরা।

পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবক মিজানুর রহমান বলেন, ১ জানুয়ারি নতুন বই দেয়া হলেও ক্লাস নেয়ার বিষয়ে শিক্ষকদের আগ্রহ নেই। নিজেদের মনমতো বিদ্যালয়ে আসেন আবার ইচ্ছামতো চলে যান। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হয়। বছরের শুরুতেই নতুন বই পেয়ে লেখাপড়ায় আগ্রহী হলেও শিক্ষকদের অবহেলায় মনোযোগ হারাচ্ছে শিশুরা।

primary teacher

আরেক অভিভাবক আব্দুস ছাত্তার বলেন, বছরের প্রথম দিন নতুন বই দিচ্ছে সরকার, যেন শিশুদের পড়ালেখায় কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। অথচ শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নেন না। তারা যদি গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াতো তাহলে ফলাফল আরও ভালো হতো।

সময়ের আগেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয়ার কারণ জানতে চাইলে সন্যাসদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিল্পী বেগম বলেন, বিদ্যালয় তো ছুটি হওয়ার কথা নয়। আমি খোঁজখবর নিয়ে জানাচ্ছি।

প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের আগে বিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাঘাটা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

জাহিদ খন্দকার/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।